এক পদচ্যুত আইএফএস অফিসারকে নিজের ইচ্ছা মতো পদে বসানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামি। ঘটনাটি সুপ্রিম কোর্টের গোচরে আসায় সরকারকে ভর্ৎসনা করলেন বিচারপতিরা। সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন করল, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মানে কি যা খুশি তা-ই করতে পারেন! একটি গণতান্ত্রিক সরকারের প্রধানের কাছ থেকে পুরনো দিনের রাজার মতো আচরণ বাঞ্ছিত নয়। আমরা কোনও সামন্ততান্ত্রিক জমানায় বাস করছি না।’’
বিতর্কের সূত্রপাত বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামির এক বিতর্কিত আইএফএস অফিসারকে রাজাজি টাইগার রিজার্ভের ডিরেক্টর হিসাবে নিয়োগ করাকে কেন্দ্র করে। অভিযোগ, রাজ্যের বনমন্ত্রী ওই বিতর্কিত আইএফএস আধিকারিকের নিয়োগের বিরোধিতা করেছেন। বন দপ্তরের সচিব, সহ সচিবরাও ওই আধিকারিকের নিয়োগের বিরুদ্ধে ছিলেন। কিন্তু তাঁদের উপেক্ষা করে মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি নিজের ক্ষমতা বলে কার্যত জোর করে ওই আধিকারিককে রাজাজি টাইগার রিজার্ভের ডিরেক্টর করেন। সেই নিয়েই মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে।
সেই মামলায় শীর্ষ আদালত বলছে, “আমরা আর সামন্ত যুগে নেই। মুখ্যমন্ত্রীরা আগেকার দিনের রাজার মতো আচরণ করতে পারেন না। তাঁরা যা বলবেন, তাই হবে সেটা হতে পারে না। মানুষের আস্থা বলেও একটা ব্যাপার থাকে। শুধু মুখ্যমন্ত্রী বলেই কেউ যা ইচ্ছা তাই করতে পারে না।”
মামলাটি শুনানির জন্য উঠেছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিআর গাভাই, বিচারপতি পিকে মিশ্র এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চে। বিচারপতিদের প্রশ্নের মুখে রাজ্য সরকার জানায়, ওই অফিসারের নিয়োগ গত মঙ্গলবার, অর্থাৎ ৩ সেপ্টেম্বরই বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু বিচারপতিরা সেই জবাবেও শান্ত হননি। মুখ্যমন্ত্রী ধামির সরকারের উদ্দেশে তাঁরা বলেন, ‘‘উনি মুখ্যমন্ত্রী বলে যা খুশি তা-ই করতে পারেন? একজন অফিসারের নিয়োগ নিয়ে সমস্ত আপত্তি তিনি এড়িয়ে গেলেন? এক বারও ভাবার প্রয়োজন মনে করলেন না কেন আপত্তি উঠছে?’’
সুপ্রিম কোর্টের ওই প্রশ্নের জবাবে রাজ্য সরকার বলেছিল, ‘‘একজন দক্ষ অফিসার, যাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই, তাঁকে স্রেফ কিছু আপত্তির জন্য বলি দেওয়া যায় না।’’ এর জবাবে সুপ্রিম কোর্ট পাল্টা বলে, ‘‘যদি কোনও অভিযোগ না-ই থেকে থাকে, তা হলে আপনারা তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করছেন কেন?