গত মঙ্গলবার আদালতে তোলা হলে সন্দীপ ঘোষকে চড় মেরেছিলেন এক বিক্ষোভকারী। এক সপ্তাহ বাদে মঙ্গলবার ফের আদালতে পেশ করা হয়। এদিন তাঁকে লক্ষ্য করে উড়ে এল জুতো।
বিচারকের নির্দেশের পর মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে সশরীরে হাজির করানো হয় সন্দীপ-সহ চার জনকে। আরজি কর হাসপাতালে দুর্নীতির অভিযোগের মামলায় ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সন্দীপ, সুমন হাজরা, বিপ্লব সিংহ এবং আফসর আলিকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে সেই নির্দেশ দিয়ে এজলাস থেকে বিচারক বেরিয়ে যেতেই শুরু হয় স্লোগান, ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই…’। কেউ বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। মূলত মহিলা আইনজীবীদেরই সন্দীপের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা যায়। সন্দীপকে ‘ধর্ষক’ সম্বোধন করেও চিৎকার করতে তাকেন কেউ কেউ। তাঁর ফাঁসির দাবিও ওঠে আদালতকক্ষে। এখানেই শেষ নয়। সন্দীপের দাঁত ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেন এক জন। তিনি বলেন, ‘‘অপরাধী হাসতে পারে না। দাঁত ভেঙে দেব।’’ এক জন বলেন, ‘‘জেলের ভাত কেন খাবে? সরকারের খরচ হবে।’’
এ সবের মাঝে এক জন বলে ওঠেন, ‘‘সন্দীপ ঘোষকে জুতো মার!’’ হইচইয়ের মাঝে আদালতকক্ষে ফিরে আসেন বিচারক। হাত জোড় করে তিনি চুপ করার অনুরোধ করে বলেন, ‘‘বাইরে করুন। এখানে নয়।’’ সেই সঙ্গে এ-ও জানান, শারীরিক ভাবে কাউকে হেনস্থা করা চলবে না। বিক্ষোভকারী আইনজীবীরা তখন বলেন, ‘‘আমরা গায়ে হাত তুলব না। কিন্তু বাইরে কেউ কিছু করলে, জানি না।’’
পরিস্থিতি সামাল দিতে আদালত চত্বরে মোতায়েন করা হয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। কড়া নিরাপত্তার মাঝে সন্দীপকে আদালত কক্ষ থেকে বার করে এনে গাড়িতে তোলা হয়। সেই সময়েও বাইরে চলতে থাকে বিক্ষোভ। ‘হায় হায়’ ধ্বনি দেওয়া হয়। পুলিশের যে গাড়িতে সন্দীপকে তোলা হয়, আচমকা সেই গাড়ি লক্ষ্য করে ছোড়া হয় জুতো। সেই চটি অবশ্য গায়ে লাগেনি সন্দীপ ঘোষের। তড়িঘড়ি তাঁকে তুলে দেওয়া হয় প্রিজন ভ্যানে।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে সন্দীপের আইনজীবী এদিনও তাঁর জামিন চাননি। আবার সিবিআইয়ের আইনজীবীরাও তাদের হেফাজতে নেওয়ার দাবি জানাননি। তাঁদের দাবি, পরে ৬ দিনের জন্য ফের সন্দীপকে হেফাজতে নিতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীদের যুক্তি, কিছু তথ্য প্রমাণের ডিজিটাল ক্লোনিং করা হবে। আর কিছু তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেই তথ্যপ্রমাণ পেলে তাঁকে আবার হেফাজতে নেওয়া হবে। তাই সাতদিনের হেফাজত বাঁচিয়ে রাখা হল। যদিও আদালত সাফ জানিয়েছে, তখন সিবিআই হেফাজত দেওয়া হবে কি না তা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে। এর পরই আগামী ২৩ তারিখ পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠান বিচারক।