আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর একমাস কেটে গিয়েছে। এর মধ্যেও একাধিক ধর্ষণ, নারী নির্যাতনের খবর উঠে এসেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। এবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠল ভারতীয় বায়ুসেনার অন্দরে। মহিলা ফ্লাইং অফিসার ধর্ষণের অভিযোগ তুললেন উইং কমান্ডারের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
প্রকাশিত খবরে দাবি, রাজধানী শ্রীনগরের বায়ুসেনা ঘাঁটির এক মহিলা ফ্লাইং অফিসার তাঁর ঊর্ধ্বতন উইং কমান্ডারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এফআইআর করে তদন্ত শুরু করেছে। এনডিটিভিকে ভারতীয় বায়ুসেনা কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁরা তদন্তে পুরোপুরি সহযোগিতা করছেন।
অভিযোগকারিণী জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর, বর্ষবরণ পালিত হচ্ছিল অফিসারদের মেসে। তিনি উপহার পেয়েছিল কি না জানতে চান সিনিয়র। উপহার পাননি জানাতে, অভিযুক্ত উইং কমান্ডার জানান, তাঁর ঘরে উপহার রাখা আছে। সেই মতো ঘরে যেতে বলা হয় তাঁকে। ওই ঘরে কেউ ছিল না। পরিবারের কথা জানতে চাইলে, উইং কমান্ডার জানান, তাঁরা অন্যত্র থাকেন। এর পর তাঁর উপর যৌন নির্যাতন চালানো হয়।
বিষয়টি নিয়ে দুই মহিলা অফিসারের দ্বারস্থ হন অভিযোগকারিণী। এর পর কর্নেল স্তরের এক আধিকারিক তদন্তের নির্দেশ দেন। জানুয়ারি মাসেই দু’বার মুখোমুখি বসিয়ে বয়ান নেওয়া হয় বলে দাবি অভিযোগকারিণীর। সেই সময় সিনিয়র আধিকারিকের উপস্থিত থাকায় আপত্তি জানান তিনি। ভুল বুঝতে পেরে তদন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয় মাঝ পথে। এর পর অভ্যন্তরীণ কমিটির কাছে নতুন করে অভিযোগ জানান তিনি। বেশ কয়েক মাস পর নেড়েচেড়ে দেখা হয় সেটি।
এখানেই হেনস্থা শেষ নয়। মহিলা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি পরে অনেকবার অফিসে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। এমন হাবভাব করেছেন যেন কিছুই হয়নি! এরপর তিনি তাঁর দুই সহকর্মীকে বিষয়টি জানান। তাঁদের পরামর্শ নিয়েই অবশেষে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
পাইলটের অভিযোগ বায়ুসেনার উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের বিরুদ্ধেও রয়েছে। তিনি বলেছেন, কমিটি গঠন করিয়ে তাঁকে এবং উইং কম্যান্ডারকে মুখোমুখি বসিয়ে বয়ান রেকর্ড করানো হয়েছিল। দুবার এই কাজ করার পরও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয়, অভিযুক্তর প্রতি নরম মনোভাব দেখানো হয়েছে বলেও দাবি তাঁর। কমিটি এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কারা তা জানতে চেয়েছে। এমন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কীভাবে পাওয়া সম্ভব, সেই প্রশ্ন তুলেছেন মহিলা অফিসার। পাশাপাশি, তিনি ছুটি নিতে চাইলেও তাঁকে তা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন।
এই কারণে গত দুবছরে তাঁকে বারংবার অভিযুক্ত অফিসারের সামনে যেতে হয়েছে, পার্টিতে থাকতে হয়েছে বলে পুলিশকে বলেছেন নির্যাতিতা। তাই জন্য তিনি না ভাল করে কাজে মন দিতে পারছেন, না নিজের ব্যক্তিগত জীবন কাটাতে পারছেন। দীর্ঘদিন ধরে তাঁর মানসিক হেনস্থা হচ্ছে বলে অভিযোগ।