বৃষ্টি মাথায় নিয়ে সারা রাত স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। রাতেই তাঁদের অবস্থান মঞ্চে এসেছিলেন আরজি করের নির্যাতিতা চিকিৎসকের মা, বাবা এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা। ‘আশা করি বিচার পাব’, মঙ্গলবার রাতে বিক্ষোভের মঞ্চে ফের একবার বললেন নির্যাতিতার মা।
বুধবার দুপুরে আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল স্বাস্থ্য ভবন চত্বরে পৌঁছতেই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তাঁকে দেখেই অবস্থানরত জুনিয়র ডাক্তারেরা‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিলেন। যদিও অগ্নিমিত্রার দাবি, তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে রাজনীতির রঙ লাগাতে আসিনি। দলীয় কার্যালয়ে কাজে এসেছেন।
মঙ্গলবার রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে ইমেল পাঠিয়ে আলোচনায় বসার কথা জানিয়েছিলেন। সেখানে বলা হয়েছিল, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নবান্নে আলোচনায় বসতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ইমেলের ভাষা নিয়ে আপত্তি ছিল আন্দোলনকারীদের। রাত পেরিয়ে সকাল হলেও এখনও জট কাটেনি। তবে আন্দোলনকারীরা জানালেন তাঁরা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তার কিঞ্জল নন্দ বলেন, ‘‘আমাদের বলা হয়েছে ১০ জনের প্রতিনিধি দল নিয়ে দেখা করতে। কিন্তু আমাদের দাবি অন্তত ২৫ জন যাওয়ার অনুমতি দিতে হবে।’’ একই সঙ্গে তিনি আরও জানান, আলোচনায় বসলেই যে অবস্থান তুলে নেওয়া হবে তা নয়। দাবি পূরণের জন্য সরকার কী পদক্ষেপ করছে তা দেখার পরই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রথমে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের পাঁচ দফা দাবি ছিল। পরে একটি অতিরিক্ত দাবি সংযোজিত হয়। তাঁদের দাবি, আরজি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় দোষীদের দ্রুত চিহ্নিত করা, কী কারণে অপরাধ, তা প্রকাশ করা। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা। যে বা যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে প্রমাণ লোপাটের সঙ্গে যুক্ত তাদের চিহ্নিত করে আইনানুগ পদক্ষেপের দাবি উঠেছে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের ইস্তফাও চেয়েছেন আন্দোলকারীরা। এ ছাড়া রাজ্যের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিও উঠেছে। রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজগুলিতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখা ও রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তার ইস্তফাও চেয়েছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা।