দুর্গাপূজার সময় পশ্চিমবঙ্গে বাড়ে ইলিশের চাহিদা। ইলিশকে পূজার অন্যতম অনুসঙ্গ হিসেবেও বিবেচনা করেন অনেকে। এই দুর্গাপূজার আগে কলকাতার মানুষের জন্য ইলিশ পাঠাতেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এবার পূজায় পশ্চিমবঙ্গে আর ইলিশ পাঠাবে না বাংলাদেশ।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানিয়েছেন, এবারের দুর্গোৎসবে বাংলাদেশের হিন্দুধর্মাবলম্বীসহ অন্যান্য নাগরিকরা যেন ইলিশ খেতে পারেন সেটি নিশ্চিত করা হবে। ভারতের চেয়ে দেশের জনগণকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে।
এক সাক্ষাৎকারে মৎস্য উপদেষ্টা বলেছেন, “আমরা ক্ষমা চাচ্ছি, কিন্তু আমরা ভারতে কোনো ইলিশ পাঠাতে পারব না। এটি দামী মাছ। আমরা দেখেছি আমাদের দেশের মানুষই ইলিশ খেতে পারেন না। কারণ সব ভারতে পাঠানো হয়। যেগুলো থাকে সেগুলো অনেক দামে খেতে হয়। আমরাও দুর্গোৎসব পালন করি। আমাদের জনগণও এটি উপভোগ (খেতে) পারবে।”
মৎস্য উপদেষ্টা বলেছেন, ইলিশ নিয়ে ভারতের কোনো ইস্যু সৃষ্টি করার দরকার নেই। যদি তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় তাহলে তাদের তিস্তার পানি বন্টনের সমস্যার সমাধার করা উচিত।
বন্ধুত্বের নজির হিসেবে দুর্গাপূজার সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪ হাজার টন ইলিশ ভারতে পাঠাতেন। হাসিনার এই উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন মৎস্য উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেছেন, “ভারতে মাছ পাঠানোর কোনো প্রয়োজনীয়তা ছিল না। ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্কের কথা বলে তার মাছ পাঠানো ঠিক হয়নি। তিনি বাংলাদেশের মানুষের প্রয়োজনীয়তাকে উপেক্ষা করেছেন।”
আগেই ভারত থেকে ২ লক্ষের উপর ডিম পাঠানো হয়েছিল বাংলাদেশে। এবার আরও ৪৭ লক্ষ ডিম আমদানি করবে ঢাকা। আর এখানেই প্রশ্ন তুলে বাংলাদেশকে চিঠি দিয়েছেন কলকাতার ব্যবসায়ীরা। চিঠিতে তাঁরা লিখেছেন, ‘ইলিশ নিয়ে ঢাকার সবুজ সংকেত না পেলেও আমরা বাংলাদেশে ডিম তো পাঠাচ্ছি।’ বাংলাদেশে ডিমের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হল কলকাতার শ্রীলক্ষ্মী এন্টারপ্রাইজ।
বাঙালিদের অত্যন্ত প্রিয় ও দুর্গাপুজোয় অন্যতম চাহিদা এই ইলিশ মাছের জন্য কলকাতাবাসী বাংলাদেশের ওপর নির্ভর করে থাকে। বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করেছে ফিস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ত্রিপুরা ও অসমেও যায় বাংলাদেশের ইলিশ। বিশ্বে ইলিশ চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ যোগানদাতা বাংলাদেশ।