বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা তথা বহির্বিশ্বে দেশের অভিনয় শিল্পের মুখ আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। রবিবার গভীর রাতে তাঁর ঢাকার বেইলি রোডের নওরতন কলোনীর বাড়ি থেকে ৭৭ বছরের প্রবীণ এই অভিনেতাকে পুলিশ একটি খুনের মামলায় গ্রেফতার করেছে।
এই খবর জেনে সে দেশে অনেকেই বিস্মিত। এফআইআরে বলা হয়েছে, গণ অভ্যুত্থানের সময় নূর বন্দুক হাতে ছাত্র-জনতার মোকাবিলায় পথে নেমেছিলেন। এই অভিযোগে ঢাকার মীরপুর থানায় মামলা হয়।
রবিবার রাতে ঢাকার বেইলি রোডে নওরতন কলোনির বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি।
আসাদুজ্জামান নূর গ্রেফতার হওয়ার খবর জানাজানি হতে বাংলাদেশের সমাজমাধ্যমে তিন দশক আগে সম্প্রচারিত ধারাবাহিক টেলিভিশন নাটক ‘কোথাও কেউ নেই’-এর টুকরো টুকরো অংশ ভাইরাল হতে শুরু করেছে। সে দেশের জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক প্রয়াত হুমায়ুন আহমেদের রচনাকে ভিত্তি করে তৈরি ওই ধারাবাহিকের প্রধান এবং জনপ্রিয় চরিত্র ছিল ‘বাকের ভাই’।
বেকার, পরপোকারি, অন্যায় দেখলে প্রতিবাদে ঝাঁপিয়ে পড়া সেই তরুণ চরিত্র গোটা দেশে এমন আলোড়ন তৈরি করে যে কাহিনির শেষে একটি মিথ্যা খুনের মামলায় বাকের ভাইয়ের ফাঁসির আদেশ হলে মানুষ হুমায়ুন আহমেদের বাড়ি ঘিরে ফেলেছিল। তারা দাবি করেন, কাহিনি বদলাতে হবে। বাকের ভাই-কে ফাঁসি দেওয়া যাবে না। দেশ ও সমাজ বদলের স্বার্থে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
পরিস্থিতি এমন হয় যে পুলিশের পরামর্শে হুমায়ুন আহমেদকে কিছুদিন আত্মগোপনে থাকতে হয়। কারণ, তিনি কাহিনি বদলাতে রাজি হননি। ফাঁসির দৃশ্য প্রচারের দিন হাজার হাজার মানুষ বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন ঘিরে রেখে বিক্ষোভ দেখান। পরিস্থিতি সামাল দিতে মিলিটারি নামাতে হয়। অনেকে ওইদিন টিভি বন্ধ রাখেন।
ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকার মিরপুর থানায় করা একটি মামলায় আসামি হিসেবে নূরের নাম আছে।