অনুব্রত মণ্ডলের বোলপুরে প্রত্যাবর্তনের দিনেই প্রশাসনিক কাজে সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জল্পনা শোনা যাচ্ছিল, বিকেলে কেষ্টর সঙ্গে বৈঠকও করবেন তিনি। কিন্তু জল্পনায় জল ঢেলে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেই কলকাতার পথে রওনা হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ বোলপুর গিয়েও কেষ্টর সঙ্গে দেখা করলেন না তিনি।
তিহাড় থেকে ফিরে অনুব্রত যখন এদিন নিচুপট্টির বাড়িতে ঢোকেন দেখা যায়, তাঁর অনুগামীরা ঢাকঢোল পেটাচ্ছেন। গাঁদাফুলের পাপড়ি উড়ে পড়ছে তাঁর মাথায়। সাংবাদিকদের বাড়িয়ে দেওয়া বুমের সামনে মুখ এনে এর পর অনুব্রত বলেন, ‘আমি দিদিকে ভালবাসি। দিদিকে গোটা বাংলা ভালবাসে। দেশ ভালবাসে।’
অনুব্রতর ব্যাপারে বরাবর স্নেহশীল ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ২০২২ সালে যখন গরু পাচার মামলায় অনুব্রতকে নিচুপট্টির বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় সিবিআই, তখন থেকেই মমতার একটাই প্রতিক্রিয়া, ষড়যন্ত্র হয়েছে। একদিন ছাড়া পেয়ে যাবে। সেই কারণে সম্ভবত বীরভূমের জেলা সভাপতি পদটি তিনি ফাঁকা রেখেছিলেন। সাংগঠনিক কাজ চালাতে গড়ে দিয়েছিলেন কোর কমিটি। ঘটনাচক্রে ২ বছর পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু এদিন কেষ্টর ব্যাপারে তাঁর নীরবতা অনেকেরই নজর কেড়েছে।
কালীঘাট ঘনিষ্ট নেতাদের মতে, একথা ঠিক অনুব্রতর উপর আস্থাশীল ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সিবিআই তদন্তে অনুব্রতর বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠে এসেছে, তথা আয়ের অতিরিক্ত সম্পত্তি, জোর করে চাল কলের মালিকানা লিখিয়ে নেওয়া, গরু পাচারের সঙ্গে যোগসাজস—এ সবের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সতর্ক। কারণ, অনুব্রত জামিনে মুক্ত হয়েছেন মাত্র, নির্দোষ প্রমাণিত হননি। তা ছাড়া যে সব অভিযোগ সাদা কালোয় দেখা গিয়েছে তা বরদাস্ত করাও মুশকিল। তাই অনুব্রত বাড়ি ফিরলেন ঠিকই, কিন্তু তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্খায় তাঁর ওয়াপসি কতটা হবে তা এখনই বলা মুশকিল।