পুজোর সাজে নিজেকে সুন্দরভাবে তুলে ধরা শুধু ট্র্যাডিশনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটা একটা ফ্যাশন স্টেটমেন্টও। তাই চলুন, এবার পুজোর জন্য সাজগোজের কিছু আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করা যাক।
১. পুজোর সকাল: সাবেকিয়ানা ও সরলতা
অষ্টমীর অঞ্জলি দেওয়ার সময় বা সকালে মণ্ডপে ঘোরা সাধারণত একটু হালকা ও পরিপাটি সাজেই ভালো লাগে। শাড়ি বা সালোয়ার কামিজ—এমন কিছু পরুন যা সহজে বহন করা যায় এবং দেখতে মার্জিত। কটন বা হ্যান্ডলুম শাড়ি হতে পারে আপনার প্রথম পছন্দ। সঙ্গে খোলা চুল বা হালকা খোঁপা করে পরুন ফুল। মেকআপে একটু সাবলীলতা রাখুন—হালকা ফাউন্ডেশন, কাজল আর ঠোঁটে ন্যুড বা হালকা গোলাপি শেড।
২. সন্ধ্যার প্যান্ডেল হপিং: ফিউশন সাজ
পুজোর সন্ধ্যায় প্যান্ডেল হপিং-এর জন্য একটু স্মার্ট এবং ফ্যাশনেবল লুক চাই। আপনি চাইলে শাড়ির সঙ্গে একটু আধুনিক টুইস্ট এনে তা স্টাইল করতে পারেন। যেমন শাড়ির সঙ্গে বেল্ট বা কোর্ট, এমনকি স্টাইলিশ ব্লাউজ বা ক্রপ টপ পরতে পারেন। সালোয়ার-কামিজের বদলে আজকাল পালাজো বা স্কার্টের সঙ্গে কুর্তি বেশ ট্রেন্ডি। গলায় অক্সিডাইজড গয়না আর হাতে কাঁচের চুড়ি আপনার ফিউশন লুককে আরও মোহময় করে তুলবে।
৩. নবমীর রাত্রে জমকালো সাজ
নবমীর রাতে জমিয়ে পার্টি বা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা জমাবেন নিশ্চয়ই। এসময় একটু গর্জিয়াস সাজই ভালো মানাবে। বেনারসি, সিল্ক বা কটন সিল্ক শাড়ি হতে পারে আপনার প্রথম পছন্দ। শাড়ির সঙ্গে মানানসই ব্লাউজ আর ভারি গয়নায় পুরো সাজটা পূর্ণতা দিন। কানের দুল, গলার হার আর হাতে ভারি বালা বা কাঁকন সাজে জমক এনে দেবে। মেকআপেও চাই একটু ভারিক্কি ভাব—গাঢ় লিপস্টিক, স্মোকি আই মেকআপ আর হাইলাইটার।
৪. দশমীর বিদায়: লাল-সাদা সাজ
দশমীর দিনে ঐতিহ্য অনুযায়ী লাল-সাদা শাড়ি বেছে নেওয়াই বাঙালির প্রথা। এই দিনটা আবেগঘন বিদায় ও নতুন সূচনার সময়। লাল পাড়ের সাদা শাড়ি, সিঁথিতে সিঁদুর আর হাতে শাঁখা-পলা আপনার সাজকে পূর্ণ করবে। মেকআপে একটু ন্যাচারাল ফিনিশ রাখুন, আর সিঁদুর খেলার জন্য একেবারে প্রস্তুত থাকুন!
৫. চুলের সাজ
পুজোর সময়ে চুলের সাজটাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। খোলা চুল বা হালকা কার্ল করা চুল যেমন ভালো লাগে, তেমনি খোঁপাও দিতে পারেন। খোঁপায় গুঁজে নিন রজনীগন্ধা বা গাঁদা ফুল। প্যান্ডেল হপিং-এর সময় চাইলে চুলে স্টাইলিশ পনিটেল করে নিতে পারেন।
৬. পুজোর সাজের টিপস
আরামদায়ক পোশাক বেছে নিন, কারণ পুজোর ভিড়ে আর ঘোরাঘুরির মধ্যে আরামই প্রধান।
পোশাকের সঙ্গে মানানসই গয়না পরুন। অত্যধিক ভারী গয়না এড়িয়ে চলুন যদি বেশি হাঁটাহাঁটি করার পরিকল্পনা থাকে।
সঠিক মেকআপ বেছে নিন যা সারাদিন ধরে থাকবে। মেকআপ ফিক্সার ব্যবহার করতে পারেন।
চুলের সাজে আরাম ও ফ্যাশন দুই বজায় রাখার চেষ্টা করুন।
সাবেকি সাজ আর আধুনিক ফ্যাশন—দুটোকেই ফিউশন করে তুলতে পারেন আপনার নিজস্ব স্টাইল।
পুজোর সাজ কেবল ফ্যাশন নয়, এটি আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিরও প্রতিফলন। তাই প্রতিটি দিনকে আলাদাভাবে উপভোগ করুন, সাজে যোগ করুন নিজের সignature স্টাইল, আর উৎসবকে করে তুলুন আরও আনন্দময়।