কৃষ্ণনগরের তরুণীর গায়ে অ্যাসিড বা অন্য কোনও রাসায়নিক দিয়ে পোড়ানোর প্রমাণ মেলেনি। তাঁকে জীবন্ত অবস্থায় গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ময়নাতদন্ত শেষে এমনটাই জানালেন চিকিৎসক সৌম্যজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার তরুণীর অর্ধনগ্ন এবং অর্ধদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয় কৃষ্ণনগরে। পরিবারের দাবি, তাঁকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসাবে তরুণীর প্রেমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে পুলিশের তদন্তে আস্থা নেই পরিবারের। তাদের দাবি, তারা সিবিআই তদন্ত চায়। ইতিমধ্যেই অবশ্য এই ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য পুলিশ। এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন, তদন্তে রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগ (সিআইডি)-এর সাহায্যও নেওয়া হচ্ছে। ধর্ষণ বা গণধর্ষণের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করতে চাননি। জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারবেন।
বৃহস্পতিবার কল্যাণীর জহরলাল নেহেরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিহত তরুণীর দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তের শেষে চিকিৎসক সৌম্যজ্যোতি জানান, আরও বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাকি আছে। সব কাজ মিটলে তদন্তকারী অফিসারকে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে, তিনি বলেন, ‘অ্যাসিডে পোড়ানোর কোনও প্রমাণ আমরা পাইনি। যা পেয়েছি, তা ‘অ্যান্টিমর্টেম বার্ন’ (জীবন্ত অবস্থায় পোড়ানো)।’
পরিবারের অভিযোগ ছিল, তরুণীর ধর্ষণের পরে খুন করা হয়। তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি না এই প্রশ্নের উত্তরে চিকিৎসক বলেন, ‘কিছু পরীক্ষা এখনও বাকি আছে। তা না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারছি না।’
তরুণীর প্রেমিককে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। তাঁকে সাত দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক। আদালতে যাওয়ার মুখে অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত। তিনি দাবি করেন, ঘটনাস্থলে তিনি ছিলেনই না। অভিযুক্তের মা-ও দাবি করেছেন, তাঁর পুত্র নির্দোষ।
তরুণীর ময়নাতদন্ত শেষে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার অমরনাথ কে বলেন, ‘‘নির্যাতিতার পরিবারের দাবি অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত হয়েছে। জেএনএম হাসপাতালে এক জন সিনিয়র অটোপসি সার্জেন উপস্থিত ছিলেন। তিনি নিজে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন। শুক্রবারই ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা আসবেন। আশা করছি, তাঁরা আসার দু’দিনের মধ্যেই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেয়ে যাব। তরুণীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতে পুলিশ সাহায্য করবে। অভিযুক্তকে সাত দিনের হেফাজতে পেয়েছি। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’’