বাংলা বিভিন্ন ভাষাভাষী, বিভিন্ন জাতির মানুষের থাকার জায়গা। বাংলাই একমাত্র জায়গা যেখানে কেউ কাউকে তাঁর জাতপাত, ভাষা, খাদ্যাভাস নিয়ে প্রশ্ন করেন না। সোমবার কলকাতায় কালীপুজোর উদ্বোধন থেকে এমনই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, ভোটের সময় অনেকে বাঙালি এবং অবাঙালির মধ্যে ভাগাভাগির চেষ্টা করেন। যা সমীচীন নয়।
এদিন বিকেল থেকেই কলকাতার একাধিক কালীপুজো কমিটির পুজো উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তর কলকাতার গিরিশ পার্ক থেকে শুরু করে জানবাজার, শেক্সপিয়র সরণি, ভেনাস ক্লাব, ইউথ ফ্রেন্ডস, ইন্ডিয়া ক্লাবের কালীপুজোর উদ্বোধন করেন তিনি।
জানবাজারে উদ্বোধনে এসে এদিন মমতা কলকাতা তথা রাজ্যের গুরুত্ব নিয়েও বক্তব্য রাখেন। রানি রাসমণির প্রসঙ্গ তুলে জানবাজারের ইতিহাস তুলে ধরেন। শুধু তাই নয়, বিরোধীদের উদ্দেশে নাম না করে বলেন ‘কেউ কেউ বাংলার বদনাম করছে। তাদের বলব বাংলাটাকে নিজের ভাবুন। আজও বাংলা যা পারে তা কেউ পারে না।’
ইয়ুথ ফ্রেন্ডস ক্লাবের কালীপুজোর উদ্বোধনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ওই জায়গাটি তাঁর বিধানসভা (ভবানীপুর) এলাকার মধ্যে পড়ে। বাঙালি, গুজরাতি, মুসলমান, খ্রিষ্টান— সমস্ত ধর্ম এবং জাতির মানুষ মিলেমিশে থাকেন। কিন্তু ভোটের সময় বেশ কিছু রাজনৈতিক দল ভাগাভাগির চেষ্টা করেন। মমতার কথায়, ‘‘এটা খারাপ।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমার একটা জিনিস শুনে খারাপ লাগে, ভোটের সময় অনেকে বাঙালি-অবাঙালি করেন। মনে রাখবেন, জায়গাটার নাম বাংলা। আমরা সবাইকে নিয়ে চলব।বাংলা তাঁদের, যাঁরা বাংলার জন্য ভাবেন। বাংলা একমাত্র জায়গা যেখানে কেউ আপনাকে জিজ্ঞেস করবে না, আপনি কোন ধর্মের? কেউ প্রশ্ন করবেন না আপনার জাত নিয়ে, আপনি বাংলা ভালবাসেন কি না,আপনি ভেজ খান না নন ভেজ। এই রাজ্য আপনার। এখানে বসবাস আপনার অধিকারের মধ্যে পড়ে।’’
কালীপুজোর শুভেচ্ছা জানিয়ে বাজি ফাটানো নিয়ে সকলকে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘সব কিছুতে প্রশাসনের একটা ভূমিকা থাকে। সকলকেই অভিনন্দন জানাচ্ছি। আর সবাইকে বলছি, বাজি এমন ফাটাবেন যাতে কারও কোনও অসুবিধা না-হয়। প্রশাসনের কথা শুনবেন সবাই। শব্দদূষণ, মানসিক দূষণ করবেন না। পরিবেশবান্ধব বাজি ফাটাবেন।’’