মঙ্গলবার রাতে কারাগার থেকেই পাক নাগরিক এবং তাঁর দলের সমর্থকদের ‘শেষ পর্যন্ত লড়াই’ করার বার্তা দিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কিন্তু, মধ্যরাতে কড়া হাতে এই আন্দোলন দমন করা শুরু করে পাক সরকার। অবশেষে, বুধবার ইসলামাবাদে তাদের এই বিক্ষোভ শেষ করতে বাধ্য হল ইমরান খানের দল।
ইসলামাবাদের জেলে বন্দি অবস্থাতেই রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রদর্শন করেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। প্রিয় নেতার কারামুক্তির দাবিতে গত রবিবার থেকে উত্তাল হয়ে ওঠে পাকিস্তান। ইমরানের স্ত্রী বুশরা বিবির নেতৃত্বে চলা এই আন্দোলনে সংঘর্ষে ৬ জন সেনার মৃত্যু হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইসলামাবাদের রাস্তায় সেনা মোতায়েন করে পাকিস্তান। দেখামাত্রই গুলি চালানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পর বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে রাতভর অভিযান চালায় সেনা। বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে চলে গুলি। সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, বুধবার সকালে ইসলামাবাদের রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায় প্রচুর গুলির খোল। এর পরই আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয় ইমরানের দল ‘পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ’ (PTI)।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সংঘর্ষের জেরে আহত হন অনেকে। বেশ কয়েকটি গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছোড়া হয়েছে কাঁদানে গ্যাস। অভিযান চলাকালীন এলাকার আলো নিভিয়ে দেওয়া হয় বলেও খবর। এমনকি, ইমরানের সমর্থকদের দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয় পাক সেনাকে।
২০২৩ সালের অগস্ট থেকে জেলবন্দি ইমরান। সম্প্রতি কারাবন্দি অবস্থাতেই রাজধানী ইসলামাবাদ-সহ পাকিস্তানের বড় শহরগুলি জুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা পিটিআই (পাকিস্তান তেহরিক-এ-ইনসাফ) প্রধান।ইমরানের অভিযোগ, তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে। দলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য এমনটা করছে সরকার পক্ষ।
জিও নিউজ বলছে, সংবিধানের ২৪৫ নং ধারার দোহাই দিয়ে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে- দেশের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং দুর্বৃত্তদের সঙ্গে লৌহহস্তে মোকাবিলা করতে পুলিশকে সহায়তা করবে সেনা সদস্যরা। ২৪ নভেম্বর দেশ জুড়ে তাঁর দল এবং সাধারণ মানুষের উদ্দেশে পথে নামার ‘শেষ আহ্বান’ জানান ইমরান। টনক নড়ে শাসক জোটের। রাজধানী ইসলামাবাদে পরবর্তী দু’মাসের জন্য জারি হয় ১৪৪ ধারা।
রবিবার ইমরানের স্ত্রী বুশরা বিবির নেতৃত্বে রাজধানীর উদ্দেশে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর কর্মী এবং সমর্থকেরা। সোমবার সন্ধ্যায় মিছিল ইসলামাবাদে পৌঁছয়। বিক্ষোভকারীরা আরও এগোনোর সিদ্ধান্ত নিলে নামানো হয় সেনাবাহিনী