শিবসেনা (শিন্ডে) ‘বিহার মডেল’ মেনে একনাথ শিন্ডেকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি তুললেও কার্যত সেই সম্ভাবনা খারিজ করে দিল বিজেপি। বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র প্রেম শুক্ল বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিহারের মতো পরিস্থিতি মহারাষ্ট্রে নেই। নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “ভোটের আগেই নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করার প্রস্তাব দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু মহারাষ্ট্রে আমরা এমন কোনও কথা দিইনি। তা ছাড়া মহারাষ্ট্রে আমাদের সাংগঠনিক ক্ষমতাও বেশি।”
পুরোপুরি খোলসা না-করলেও বিজেপির ইঙ্গিত স্পষ্ট। মহারাষ্ট্রের শাসক জোট ‘মহাজুটি’র ‘বড়দা’ হিসাবে সরকারের রাশ নিজেদের হাতেই রাখতে চায় পদ্মশিবির। প্রসঙ্গত, সোমবার ‘বিহার মডেলের’ প্রসঙ্গ টেনে শিন্ডেসেনার মুখপাত্র নরেশ মাশকে বলেছিলেন, ‘‘বিহারে যেমন বিজেপি আসনসংখ্যার দিকে না-তাকিয়ে নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিল, তেমনই মহারাষ্ট্রেও শিন্ডেকে মুখ্যমন্ত্রী করা উচিত।’’ অর্থাৎ, জোটের ছোট শরিক হলেও মুখ্যমন্ত্রিত্ব তাদেরই দেওয়ার দাবি তোলে শিন্ডের দল।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার টোপ গিলে উদ্ধবের শিবসেনায় ভাঙ্গন ধরিয়ে বিজেপিতে ভিড়েছিলেন শিন্ডে। বিজেপি তাকে মুখযুমন্ত্রী করেছিল। শিন্ডে হয়তো মনে মনে গিয়েছিলেন এমনি করেই যায় যদি দিন যাক না। কিন্তু একমাঘে শীত যায় না। বিজেপি জানতো মহারাষ্ট্রবাসী গদ্দারকে বেশিদিন পছন্দ করবে না। তারা সময়ের অপেক্ষায় ছিল। শিন্ডের মতো দলকে খেয়ে ফেলতে যে তাদের বেশি কসরত করতে হবে না তা শাহ-মোদী-নাড্ডারা বিলক্ষণ জানতেন। ফলে একদিলে দুই পাখি তারা মেরেছেন। একদিকে উদ্ধবকে দুর্বল করা গিয়েছেন অন্যদিকে ‘গদ্দার’ শিন্ডেকেও। ফলে এবার ফড়নবীশের হাতে কুরসী ছেড়ে দেওয়া ছাড়া একনাথ শিন্ডের আর করার কিছু নেই। উদ্ধবের দল একটু ভালো করলেও হয়তো বিজেপিকে ব্ল্যাকমেল করা যেত, কিন্তু সেই সুযোগ নেই। ফলে এলখন ফের ফড়নবীশকেই ছাড়তে হবে মুখ্যমন্ত্রীর কুরসী। ফলে মহারাষ্ট্র ফের আর একবার চলবে রিমোর্ট কন্ট্রোলে। আরও একটি রিমোর্ট কন্ট্রোল মুখ্যমন্ত্রী পেল বিজেপি।