বাংলাদেশে লাগাতার সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচারের যে অভিযোগ উঠছে, তা নিয়ে ভারতের ঘরোয়া রাজনীতিও আন্দোলিত। নয়াদিল্লি যাতে এ ব্যাপারে সদর্থক পদক্ষেপ করে সে ব্যাপারে দাবি উঠেছে। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল এ ব্যাপারে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন। তিনি পষ্টাপষ্টি বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার এখনই বন্ধ হওয়া উচিত। জয়ওয়াল এও জানিয়েছেন, কূটনৈতিক স্তরে বাংলাদেশের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং ঢাকাকে বলা হয়েছে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।তবে তাৎপর্যপূর্ণ হল, বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র এও জানিয়েছেন যে, চলতি পরিস্থিতির জন্য দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে কোনও প্রভাব পড়বে না।
এ কথা এই কারণেই তাৎপর্যপূর্ণ যে, বহু নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর ব্যাপারে ভারতের সরবরাহের উপর নির্ভরশীল ঢাকা। যেমন, ডিম, পেঁয়াজ, বিদ্যুৎ, ওষুধ ইত্যাদি। অর্থাৎ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশকে ডিম, পেঁয়াজ, জল দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার মতো হঠকারী কোনও সিদ্ধান্ত সরকার নেয়নি।
কূটনীতিকদের অনেকের মতে, পড়শি দেশের সঙ্গে এমন হঠকারী ব্যবহারের খেসারত আগে দিতে হয়েছে ভারতকে। ২০১৩ সালে নেপালের সঙ্গে আর্থিক অবরোধ শুরু করেছিল ভারত। সার দিয়ে ট্রাক আটকে ছিল সীমান্তে। তার ফলে যে ব্যাকল্যাশ হয়েছিল, তার স্মৃতি এখনও টাটকা। তা ছাড়া ভারতের সেই অবস্থান নেপালকে আরও বেশি করে চিনের মুখাপেক্ষী করে তোলে।
সুতরাং যাঁরা মনে করছেন, মোদী সরকার বাংলাদেশের ব্যাপারে আরও একটা সার্জিকাল স্ট্রাইকের মতো ঘটনা ঘটিয়ে বসবে, আপাতত তাঁরা হতাশ হতে পারেন। মনে রাখতে হবে কূটনীতি ও রাজনীতি এক নয়। আর সেটাই হয়েছে গেরুয়া জমানায়।