রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী বেচারাম মান্নার উপস্থিতিতে সোমবার ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেও মিলল না রফাসূত্র। ভিন্রাজ্যে আলু পাঠানোর ক্ষেত্রে কড়াকড়ি শিথিল করা হতে পারে, সরকারের তরফে এমন আশ্বাস না-মেলায় সোমবার রাত থেকেই ধর্মঘটের সিদ্ধান্তে অনড় থাকলেন রাজ্যের আলু ব্যবসায়ীরা। যার জেরে মঙ্গলবার থেকে খোলাবাজারে আলুর (potato) দাম আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার অবশ্য এ ব্যাপারে সোমবার বিধানসভা অধিবেশনে (Assembly)মুখ্যমন্ত্রী আবারও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আগে বাংলা, তারপর বাকিরা’। ঘটনা হল, মুখ্যমন্ত্রীর দফতরকে আড়ালে রেখেই ভিনরাজ্যে আলু রফতারনির অভিযোগ উঠেছিল। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মমতা জানিয়ে দেন ‘বাংলায় আলুর দাম বাড়িয়ে অন্য রাজ্যে আলু পাঠিয়ে বাড়তি মুনাফা লুটবে, আর আমি ইনসিওরেন্সের ব্যবস্থা করব, দুটো জিনিস একসঙ্গে চলতে পারে না। এই জিনিস আমি বরদাস্ত করব না।’
এর পরপরই সীমান্ত সিল করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। যার জেরে সীমান্তে গিয়ে আটকে যাচ্ছে আলুবোঝাই ট্রাক। সোমবার বিধানসভাতেও মমতা বললেন, ‘আলুর দাম বাড়লে আমরা কিনে সুফল বাংলায় সাপ্লাই করি। কিন্তু কিছু লোক বাইরে রফতানি করছে নিজেদের ব্যবসার জন্য।’
পরিসংখ্যান দিয়ে মমতা জানান, ‘বাংলার চাহিদার ৭৫% পেঁয়াজ এখানে উৎপাদন হয়। সেখান থেকেও লোকে বাইরে পাঠাচ্ছে। ফলে দাম বাড়ছে। মধ্যবিত্তের সমস্যা বাড়ছে। পকেটে টান পড়ছে। এটা হতে দেওয়া যায় না। আগে বাংলা পাবে, আগে ঘর সামলাব, তারপর বাকিরা’।
ব্যবসায়ীদের দাবি, রাজ্যের কমবেশি ৫০০টি হিমঘরে এখনও ছয় থেকে সাড়ে ছয় লক্ষ মেট্রিক টন আলু মজুত রয়েছে। ডিসেম্বরে রাজ্যের মোট আলুর চাহিদা তিন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ মেট্রিক টন। স্বাভাবিক ভাবেই ডিসেম্বরে রাজ্যের চাহিদা মেটানোর পরেও হিমঘরগুলিতে আড়াই থেকে তিন লক্ষ মেট্রিক টন আলু উদ্বৃত্ত থেকে যাবে। সরকার ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিয়েছে, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে রাজ্যের সমস্ত হিমঘর খালি করতে হবে। স্বাভাবিক ভাবে উদ্বৃত্ত ওই আলু ভিন্রাজ্যে পাঠানো ছাড়া অন্য কোনও পথ নেই। এর পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই বাজারে ঢুকতে শুরু করবে নতুন আলু। সে ক্ষেত্রে রাজ্যের বাজারগুলিতে কিছুটা হলেও চাহিদা কমবে সংরক্ষিত আলুর।