বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আরও এক বার দল এবং সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তা-ই নয়, সোমবার দুপুরে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দিয়ে তিনি বাংলাদেশে শান্তিসেনা (পিস কিপিং ফোর্স) পাঠানোর জন্য কেন্দ্রকে রাষ্ট্রপুঞ্জের সঙ্গে কথা বলার আর্জি জানান।
সোমবার বিধানসভা অধিবেশনের প্রথমার্ধ্বেই যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। একাধিক বিষয় নিয়ে বিবৃতি দেন। ওঠে বাংলাদেশ প্রসঙ্গও। মুখ্য়মন্ত্রী তা নিয়ে সে দেশের সঙ্গে বাংলার সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, ”আমাদের বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের ওখানে সম্পত্তি আছে, পরিজন আছে। এপারে থাকে, ওপারে ছেলেমেয়ের বিয়ে হয়েছে। তাঁদের অফিসিয়াল পাসপোর্ট আছে। বেআইনি অনুপ্রবেশ নিয়ে বলছি না। সেটা কেন্দ্রের বিষয়। এখানে কেন্দ্র সরকার যা করে তাই মেনে নিই। কিন্তু ১০ দিন ধরে দেখছি কেন্দ্রের সরকার চুপ করে আছে। তাদের দল বলছে, সীমান্ত আটকে দেব, খাবার পাঠাতে দেব না। কেন্দ্র একমাত্র বললে আমরা এটা করতে পারি। কোনও ধর্ম, কোনও বর্ণ-জাতি অত্যাচারিত হলে আমরা বলতেই পারি। তারা সুস্থ থাক। কিন্তু চাইব আমাদের লোকেদের উপর যাতে কোনও অত্যাচার না হয়।”
এর পরেই বাংলাদেশ ইস্যুতে কেন্দ্রের উপরে চাপ বাড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বন্ধুদের ওপর যেন অত্যাচার না হয়। প্রধানমন্ত্রী কথা বলুক। বিদেশ মন্ত্রী কথা বলুক। দুই দেশ কথা বলুক। নাহলে কেন্দ্র ভারতীয়দের ফেরাক। আমরা খাবার জোগাতে পারব। জাতীয় পতাকা অপমান করা উচিত নয়। আমি ইস্কনের সাথে কথা বলেছি। প্রয়োজনে রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তি সেনা পাঠাক। আমরা শান্তি চাই। বাংলা ভাষায় কথা বললে অনেক সময় অনুপ্রবেশকারী বলে অত্যাচার করা হয়।’
একই সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কিংবা বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বিবৃতি দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ নিয়ে সংসদে বিবৃতি দিন প্রধানমন্ত্রী। যদি তাঁর কোনও অসুবিধা থাকে, তবে বিদেশমন্ত্রী বিবৃতি দিন।” বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আরও এক বার দল এবং সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি জানান, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার রাজ্য সরকারের নেই। তাই তাঁরা কেন্দ্রের পরামর্শ মেনে চলবেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।