বই: কোথায় পাব তারে
লেখক: কালকূট
প্রকাশক: আনন্দ পাবলিশার্স
আমরা শহুরে, শিক্ষিত ভাষায় যাদের প্রান্তিক মানুষ বলি, তাদের বিশ্বাস, আচার, সুখ-দুঃখ, গান, কিংবদন্তি আর আশা-নিরাশার মহাকাব্য বলা চলে এই বইকে। এতে আছে প্রবল বেগে ধাবমান জীবনে পথের বাঁকে ফেলে আসা মানুষদের নিয়ে নানা ভাবনার অনুরণন। আর আছে “জীবন এত ছোটো কেন?” এই অনুক্ত আক্ষেপ।
পড়তে পড়তে খেয়াল হয়নি কখন নারাণ ঠাকুর, মাহাতো চাচী-চাচা, সুষি, কুসুম, লিলি, ভৈরবী, গোপীদাস, অবধূত, অধর মাঝিকে নিয়ে তৈরী করা পৃথিবীর মধ্যে ঢুকে গেছি। এ যেন এক অনন্ত যাত্রা, যেখানে পথ চলতে চলতে চরিত্রগুলো বদলে যেতে থাকে; কিছু চরিত্র কিছুটা পথ সঙ্গ দেয়, তো কিছু চরিত্র আরেকটু বেশী সময় সাথে থাকে। এই বইয়ের পাঠ-প্রতিক্রিয়া লেখার সাধ্য সত্যিই আমার নেই। তাই বইটা, যদি এখনও না পড়ে থাকেন তাহলে পড়তে বলার অনুরোধটুকু ছাড়া আমার কিচ্ছু লেখার নেই।
আরও পড়ুন: নিজে গোল্ড মেডেল পাওয়া ছাত্র, টেনিদা’কে টানা সাত বছর ফেল করালেন স্রষ্টা নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
এ বই না পড়লে আপনার কী হবে, জানি না। তবে পড়ার পর আপনিও লালনের শরণ নিয়ে হয়তো গেয়ে উঠবেন, “এমন মানব জনম আর কি হবে…?” আর হ্যাঁ, ঝিনি’র মতো এই বইটার স্মৃতিও আপনার কাছে থেকে যাবে অসহ্য সুখের কষ্ট নিয়ে। যে ভাবে ঝিনি চরিত্রটি দেখানো হয়েছে, মনের ভিতরে কোথাও কিছু একটা বেজেছে – বারংবার ইচ্ছা হয়েছে যেন তাকে শক্ত হতে দেখি, লেখকের ওপরে নিষ্ফল ক্রোধ জন্ম নিয়েছে। নিজেকে কালকূট প্রমাণ করার জন্য এতটার দরকার ছিল কি? সামান্য পাঠক আমি, উত্তর জানা নেই।
আমি শুধু কল্পনা করতে পারি যে কালকূটের যাত্রাপথের শেষ হবে ঝিনি নামক নদীতে মিশে..যদ্দিন না শেষ হচ্ছে তদ্দিন চরৈবতি..
মেহনাজ পারভিন
আরও পড়ুন: পাহাড়ের মানুষের আর্থ সামাজিক সংকট, মন কেমনের গল্প ‘নীল পাহাড়’ জুড়ে