- প্রিয় মানুষের ব্যথা সহ্য করাই বোধহয় পৃথিবীতে সবচেয়ে কঠিন কাজ।
- মাইনে মানেই দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, বেধ সমন্বিত টাকা। সীমাবদ্ধ। বুদ্ধিমান মানুষ কখনও সীমাবদ্ধ টাকার ওপর নির্ভর করে বড়লোকী করতে যায় না। বড়লোকী করার জন্য যে টাকার প্রয়োজন তার দৈর্ঘ্য প্রস্থ আর বোধ থাকে না। তা মাসের শেষেও আসবে না।
- পৃথিবীর দাড়ি হল তার গাছপালা, শস্যক্ষেত্র। একমাত্র পৃথিবী ছাড়া দৃশ্যমান কোনও গ্রহে প্রাণের লেশমাত্র নেই। তাই পৃথিবী তুলনাহীন। প্রাণহীন নিথর সৌরমণ্ডলে শুধু এই একটা গ্রহেই গাছ জন্মায়, জীবজন্তু ঘুরে বেড়ায়, মানুষ কথা বলে। কিন্তু এই গ্রহের সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণীটিই সবচেয়ে বেশী বোকা। সে পৃথিবীর সবুজ দাড়ি কামিয়ে দিতে চাইছে। আর ডেকে আনছে সর্বনাশ। সে ব্রাজিলের রেন ফরেস্ট থেকে হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চল সব জায়গা থেকেই কেটে নিচ্ছে গাছ। গাছ কেটে বসতি বানাচ্ছে, কলকারখানা সাচ্ছে, কাঠ পুড়িয়ে আগুন জ্বলছে, কাঠ দিয়ে আসবাব আর ঘরবাড়ি বানাচ্ছে। গাছ কাটছে, কিন্তু সেই পরিমাণে গাছ বসাচ্ছে না। এইভাবে চলতে থাকলে একদিন স্যাটেলাইট থেকে দেখা যাবে, কালো আকাশে যে সুন্দর ঢলঢ়লে নীলচে সবুজ হাসি-হাসি মুখখানা ভেসে থাকত সেটা একেবারে পশুটে হয়ে গেছে।
- রাগ বাধা না পেলে অনেক সময়ে স্তিমিত হয়ে যায়। কিন্তু অনেক সময় উল্টোটাও হতে পারে। মানুষের চরিত্র ততা নানা বৈচিত্র্যে ভরা।
- নৈরাশ্যের মধ্যেও আশার কথা ভাবতে পারাটাই সবচেয়ে বড় ফিলজফি
- মা-বাবা আমাদের যতটা ভালবাসে আমরা কিছুতেই তাদের ততটা ভালবাসতে পারি না
- ছেলেপুলে নিয়ে মাথা ঘামিয়ে কোনও লাভ নেই। আমরা তো আর তৈরি করিনি ওদের, আমাদের ভিতর দিয়ে জন্মেছে। যার যার নিজের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে।
- পাখি কি কখনও খাঁচায় ফেরে? গাঁয়ের বাড়িতে সে যখন কবুতর পুষেছিল, বারান্দায় ওপরে লটকানো কাঠের বাক্সের ঘরে রোজ ফিরে আসত পোষা কবুতরেরা। গৃহী পাখি। মানুষকে পুষল কে? মানুষ নিজেই কি? সে ঘর বানাল, কপাট বানাল, নিজেকে পুরল তার মধ্যে। কিন্তু গৃহের মধ্যে কী আশা করে মানুষ। নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা, স্বস্তি, নির্ভরতা, স্নেহ? আবার এই তার নিজস্ব ঘর তাকে পৃথিবী থেকে খানিকটা আলাদা করে দেয় না। মানুষ কি ভাবতে শেখে না, এই ঘর আমার, এই বাড়ি আমার, অন্য ঘর-বাড়িগুলো আমার নয়? অন্য ঘরবাড়ি উড়ুক পুড়ুক, আমারটা থাকলেই হয়। মানুষ এইভাবেই কি ক্ৰমে উদাসিন হয়ে যায় ঘরের বাইরের পৃথিবীর প্রতি। অন্য সকলের প্রতি?
- ডোরবেলের জন্য একটি সংক্ষিপ্ত জোরালো আওয়াজই যথেষ্ট। খামোকা এই শব্দময় শহরে আরও নতুন নতুন বিচিত্র শব্দের দৃষ্টি করা। কে জানে, এ আমলের লোকেরা বোধ হয় শব্দ ভালবাসে। কেবল শব্দ আর শব্দ। সেইজন্যই কি স্টিরিও, রক মিউজিক, চেঁচিয়ে কথা বলা?
- মানুষের গালাগাল, অশ্রাব্য কথা, করাপশন। এগুলোও পলিউশন। ভিতরকার পলিউশন।… মানুষ যে মানুষের ওপর রেগে যায়, গালাগাল করে, অপমান করে—সেটাও পলিউশন।
- …রেলগাড়ির মতো একটা ঠাণ্ডা হাওয়ার ঝাপটা এল, আর তার পিছু পিছু রসমুণ্ডির মতো বড় বড় ফোঁটায় হরির লুঠ ছড়াতে ছড়াতে বৃষ্টি।
- মানুষের সব চেয়ে বড় শত্তুর হল তার মন।…মন ভাল থাকলে দুনিয়াটা ভারি ভাল, আর মন বিগড়লে পরমান্নও তেতো।
- ছোটলোকে যা ভাবে তাই বলে, সবসময়ে মাথা খাঁটিয়ে তো বলে না।
- এক গভীর ভালবাসা বুঝি দুটি উলের কাঁটাকে পরস্পরের সঙ্গে নানা নকশায়, নানা বাঁধনে ও সম্পর্কে বেঁধে রাখে।
- যারা স্ট্রং পারসোনালিটির হয় তারা কিন্তু একটু লোনলি। চট করে কারও সঙ্গে মিশতে পারে না তো। তাই দে আর ন্যাচারালি লোনলি সোলস্।
- বুদ্ধিমান মানুষেরা, বিদ্বান মানুষেরা গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে আসে। ফলে গ্রাম বড় ফাঁক আর অন্ধকার হয়ে যায়। আজেবাজে লোকেরা সেখানে রাজত্ব করে। ভুল শিক্ষা, ভুল রাজনীতি, ভুল ধর্ম, ভুল নৈতিকতা নষ্ট করে দিচ্ছে। আমাদের গ্রামগুলোকে। গাঁয়ে গেলে লক্ষ করবেন, সব সেকেন্ড গ্রেড থার্ড গ্রেড লোক সেখানে ছড়ি ঘুরিয়ে বেড়াচ্ছে।