কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুনকে উপদেশ দিয়েছিলেন কৃষ্ণ। সেই উপদেশগুলি আজকের যুগেও প্রাসঙ্গিক এবং উপযোগী। শ্রীমদ্ভগবত গীতার(shrimad bhagwat Gita /shreemad bhagvad geeta) কিছু জ্ঞান যদি ব্যক্তি নিজের জীবনে আত্মসাৎ করে নিতে পারে, তা হলে ব্যক্তি সমস্ত কষ্ট থেকে মুক্তির পথ খুঁজে পাবে। এর ফলে মিলবে অবসাদ থেকে মুক্তি। এখানে এমন ১০টি উপদেশ রইল, যা প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিজের জীবনে মেনে চলা উচিত।
বর্তমানে বাঁচতে শেখো
অতীত এবং ভবিষ্যতের চিন্তা করা উচিত নয়। কারণ যা হওয়ার তাই-ই হবে। যা হয়, ভালোর জন্য হয়। তাই অতীত ও ভবিষ্যতের চিন্তা ছেড়ে বর্তমানে বাঁচতে শেখা উচিত।
আত্মভাবে থাকাই মুক্তি
নাম, পদ, প্রতিষ্ঠা, ধর্ম, স্ত্রী বা পুরুষ আমরা নই। এই শরীরও আমাদের নয়। অগ্নি, জল, বায়ু, পৃথিবী, আকাশ দিয়ে এই শরীর নির্মিত। অবশেষে এই পঞ্চভূতেই বিলীন হবে। কিন্তু আত্মা স্থির, আমরা আত্মা। আত্মা কখনও মরে না। আত্মার জন্ম বা মৃত্যু হয় না। আত্মভাবে থাকাই মুক্তি।
সমস্ত কিছুই পরিবর্তনশীল
পরিবর্তন সংসারের নিয়ম। এখানে সমস্ত কিছু পরিবর্তনশীল। তাই, সুখ, দুখ, লাভ, ক্ষতি, জয়, পরাজয়, মান, অপমান ইত্যাদির মধ্যে একটি স্থানে অবস্থিত থেকে জীবন উপভোগ করা উচিত।
রাগ শত্রুর সমান
নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখুন। রাগের ফলে ভ্রম সৃষ্টি হয়। এই ভ্রম বুদ্ধিকে বিচলিত করে তোলে। এর ফলে বুদ্ধি নাশ হয়। ব্যক্তি পতনের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে। রাগ, কামবাসনা ও ভয়— এগুলি আমাদের শত্রু।
ঈশ্বরের প্রতি সমর্পিত থাকুন
নিজেকে ঈশ্বরের চরণে নিবেদন করে দাও। ঈশ্বর আমাদের রক্ষা করবেন এবং আমরা দুঃখ, ভয়, চিন্তা, শোক ও বন্ধন থেকে মুক্ত হতে পারব।
দৃষ্টিকোণ শুদ্ধ রাখুন
নিজের দৃষ্টিকোণ শুদ্ধ রাখতে হবে। জ্ঞান ও কর্মকে এক রূপে দেখতে হবে। এর ফলে আমাদের দৃষ্টিকোণে পরিবর্তন আসবে।
মন শান্ত রাখুন
অশান্ত মনকে শান্ত করার জন্য অভ্যাস ও বৈরাগ্যকে নিজের মনে পাকাপোক্ত স্থান দিন। না-হলে অনিয়ন্ত্রিত মন আমাদের শত্রুতে পরিণত হবে।
কাজ করার আগে বিচার করুন
আমরা যে কর্মই করি না কেন, তার ফল আমাদেরই ভোগ করতে হয়। তাই কর্ম করার আগে বিচার করা উচিত।
নিজের কাজ করুন
অন্য কারও কাজ পূর্ণ করার চেয়ে ভালো, নিজের কাজ করুন। অপূর্ণ হলেও ব্যক্তিকে নিজের কাজই করা উচিত।
মমত্বকে জীবিত রাখুন
সকলের প্রতি মমতা, সমস্ত কাজে কুশলতা ও দুঃখ রূপী সংসার থেকে বিয়োগের নামই যোগ।
গীতার বাণী মানুষকে শান্তি দেয়। গীতার শ্লোক মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে। গীতার মাহাত্ম মানুষ অন্তর থেকে বুঝলে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের বিবিধ সমস্যা দূর হতে পারত। তবে গীতা পাঠেরও কিছু নিয়ম নীতি রয়েছে। আজকাল অবশ্য পিডিএফে(shrimad bhagwat geeta pdf) গীতা পাওয়া যায়। গীতা হোক কিংবা কুরআন(, বাইবেল হোক কিংবা গ্রন্থসাহেব, কোনও গ্রন্থই হিংসার কথা বলে না। আজকাল ফেসবুকেও গীতা গ্রূপ রয়েছে। সেখানেও গীতা নিয়ে চর্চা হয়।ভগবত গীতার সঙ্গে বিজ্ঞানের কোনও বিরোধ নেই। বিজ্ঞান মনস্ক ব্যক্তিও চাইলে নিজের মানসিক বিকাশের জন্য গীতার সাহায্য নিতে পারে। যাদের পড়াশোনার তেমন অভ্যাস নেই তারা চাইলে গীতা মাহাত্ম্য( mp3 download/ করে শুনে নিতে পারেন।