সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা আর গৃহশিক্ষকতা করতে পারবেন না। এমনকি, যুক্ত থাকতে পারবেন না কোনওরকম কোচিং সেন্টারের সঙ্গেও। নির্দেশিকা জারি করে স্পষ্ট জানিয়ে দিল শিক্ষা দফতর। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অধীনস্থ স্কুলগুলিতে কর্মরত কোনও শিক্ষক গৃহশিক্ষকতা বা কোনওরকম কোচিং সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না। এমনকি বিনা পারিশ্রমিকে কোথাও ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াতেও পারবেন না। স্কুল শিক্ষা দফতরের অধীন নির্দেশালয় এই বিজ্ঞপ্তিটি জারি করার পাশাপাশি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অধীনস্থ জেলার আধিকারিকদের মারফত স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকদের কাছেও সেই নির্দেশ দিয়েছেন।
২৭ জুন প্রকাশিত সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্কুলের কোনও শিক্ষক টিউশন করলে ব্যবস্থা নিতে পারবেন প্রধান শিক্ষক। আইন অনুযায়ী শিক্ষকদের টিউশন করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বুধবার স্কুলশিক্ষা দপ্তরের এক কর্তা জানিয়েছেন, “অনুরোধ উপরোধ অনেক হয়েছে। প্রাইভেট টিউশন করলে প্রধান শিক্ষকরা নির্দিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে এবার থানায় এফআইআর করতে পারবেন।”
আরও পড়ুন: WBJEE 2022: রাজ্য জয়েন্ট পরীক্ষার ফলপ্রকাশ ১৭ জুন, বিকেল চারটে থেকে ফল জানা যাবে
স্কুলশিক্ষা দপ্তর সম্প্রতি ৬১ জন স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। ওই শিক্ষকরা সরকারি বেতন নেওয়ার পাশাপাশি টিউশনও করেন বলে অভিযোগ। এই সংখ্যা হিমশৈলের চূড়া মাত্র। শিক্ষকদের একটি বড় অংশই গোপনে অর্থের বিনিময়ে টিউশন পড়ান। বলাই বাহুল্য সেই টাকা কর বহির্ভূত। অর্থাৎ আয়কর জমা দেওয়ার সময় সেই টাকার হিসাব দেখানো হয় না। স্কুল শিক্ষা দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সারা ভারতের স্কুল শিক্ষকতা করার জন্য কেন্দ্রীয় স্তরের যে নির্দেশিকা রয়েছে, তাতে এই বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে। সেখানেই সরকারি স্কুলগুলিতে কর্মরত শিক্ষকদের জন্য বিধি-নিষেধের কথাও জানানো আছে।
জেলা স্তরের স্কুল ইন্সপেক্টরদের তরফে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে কোনও জুনিয়র হাই স্কুল, হাই স্কুল অথবা কোনও মাদ্রাসার শিক্ষকরা গৃহশিক্ষকতা বা অন্য কোনও ধরনের শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না। ‘রাইট অব চিল্ড্রেন টু ফ্রি এন্ড কম্পালসারি এডুকেশন অ্যাক্ট ২০০৯-এর আওতায় যে এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, তা-ও জেলা স্তরের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি বিভিন্ন জেলা থেকে স্কুল শিক্ষা দফতরের কাছে শিক্ষকদের গৃহশিক্ষকতা পাঠানো নিয়ে নানা অভিযোগ আসছিল। সেই অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখার পরে নতুন করে আবারও নির্দেশিকা জারি করার প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। তাই গত ২৭ ও ২৯ তারিখে পৃথকভাবে নির্দেশিকা জারি করে ফের সরকারি স্কুল শিক্ষকদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: Recruitment News: জেনে নিন বর্তমানে কি কি চাকরির ফ্রম ফিলআপ চলছে