মোবাইলে ছবি তুলে প্রশ্ন ফাঁসের দিন শেষ। ফাঁস রুখতে প্রশ্নে কোডের ব্যবস্থা করছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ! মাধ্যমিকে প্রশ্ন ফাঁস রুখতে এবার থেকে হবে কোডের ব্যবহার। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর জন্য আলাদা আলাদা প্রশ্নে কোড থাকবে। উত্তরপত্রে পরীক্ষার্থীকে তার প্রশ্নের কোড লিখতে হবে। মাধ্যমিকে প্রশ্ন ফাঁস রুখতে এবার প্রযুক্তির ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
ভোটে যেমন স্পর্শকাতর ও অতি স্পর্শকাতর বুথ চিহ্নিত করা হয়, উচ্চ মাধ্যমিকেও সে রকম পরীক্ষা কেন্দ্র বাছাই করছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। ফি-বছর মালদা জেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ পরীক্ষা নিয়ে গন্ডগোলের জেরে বিব্রত সংসদ আরও কড়া হাতে পরীক্ষা পরিচালনা করতে চাইছে। সেই কারণে এবার অতি স্পর্শকাতর পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেটের অপব্যবহার রুখতে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেক্টর (আরএফডি) ব্যবহার করা হবে।
বৃহস্পতিবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে মালদায় বৈঠক করেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা দপ্তরের স্থানীয় আধিকারিক ও পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত জেলা অ্যাডভাইসারি কমিটি এবং কাউন্সিলের প্রতিনিধিরা।
পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ”গতবারও দেখা গিয়েছে প্রশ্নের ছবি তুলে সোশ্যাল সাইটে ভাইরাল হওয়ার ঘটনা। তাই আমরা এবার এই পদক্ষেপ নিচ্ছি। প্রশ্নপত্রের প্রত্যেকটি পাতায় থাকবে এই কোডের ব্যবহার। এর ফলে যে ভাবেই ছবি তুলুক না কেন, আমাদের নজরে চলে আসবে সেই কোড। যে প্রশ্নপত্রের ছবি তোলা হবে, সেই পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল করা হবে।”
পর্ষদ সভাপতি আরও বলেন, ‘পরীক্ষা শুরুর পর প্রশ্নের ছবি তুলে তা বাইরে পাচার করাটা তো কোনও সাধু প্রয়াস নয়। পরীক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে বিভ্রান্তি ও সন্দেহ তৈরি করাই এর উদ্দেশ্য। তাই এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরীক্ষা কেন্দ্রেই নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে ধরা সম্ভব। সে পরীক্ষার্থী হলে তার পরীক্ষাও বাতিল করা হবে।’
বৈঠক শেষে সংসদ সভাপতি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পরীক্ষায় সম্ভাব্য যে সমস্যাগুলো হতে পারে, সেগুলো এ দিনের সভায় চিহ্নিত করার পাশাপাশি কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে সব নিয়েও বিশদে আলোচনা হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোর চৌহদ্দিতে ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও অনেক জায়গায় তা ঠিক ভাবে মানা হয় না।
এ বার সেটা কঠোর ভাবে পালনের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। তাঁর সংযোজন, ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেট বিশেষ করে যা দিয়ে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়, তেমন জিনিস যাতে কোনও ভাবেই পরীক্ষা হলে না থাকে, সেটা নিশ্চিত করতে এবার আরএফডি ডিভাইস ব্যবহার করা হবে। সেই কারণে স্পর্শকাতর ও অতি স্পর্শকাতর পরীক্ষা কেন্দ্রের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেই কেন্দ্রগুলোয় এই ডিভাইস থাকবে। এ ছাড়াও মেন সাবজেক্ট গুলোর পরীক্ষার দিন পর্যবেক্ষক দলের প্রতিনিধিরা কেন্দ্রগুলোয় যেতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘বিগত বছরগুলোর কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে মালদাকে এ বার স্পর্শকাতর জেলা হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। পরীক্ষা সুষ্ঠ ভাবে পরিচলনা করতে এখানে বিশেষ নজরদারি থাকবে।’