টলিউডের ছটফটে প্রাণবন্ত মেয়েটা নিজেও বোঝেনি কখন সে সকলের মনে এতটা জায়গা করে নিয়েছে। তাই তো যেদিন মাঝরাতে ভুয়ো খবর রটল ঐন্দ্রিলা আর নেই, সেদিন বিনিদ্র রাত জেগেছিল বাংলা। সবাই প্রার্থনা করেছিল এই খবরটা ভুল করে দিও ঠাকুর। সেদিন ভগবান মুখ তুলে চাইলেও, আজ আর হল না। রবিবার ১২টা ৫৯ নাগাদ তাঁকে মৃত ঘোষণা করলেন চিকিৎসকরা। সব্যসাচীর হাতটা খালিই হয়ে গেল।
মানুষ জীবন থেকে চলে গেলে কি অনুভূতিগুলোও চলে যায়? হয়তো যায়। হয়তো যায় না। সময়ের সঙ্গে সেই ক্ষতে হয়তো প্রলেপ পড়ে। হয়তো পড়ে না। মুহূর্তগুলো বেঁচে থাকে। সব্যসাচী-ঐন্দ্রিলার প্রেমকাহিনির মুহূর্তগুলো যেমন থেকে যাবে। কারণ, সেই রূপকথার সঙ্গে বাস করেছেন আরও অনেকে।
‘ঝুমুর’ নামক একটি সিরিয়াল দিয়ে অভিনয় জগতে পা রাখেন ঐন্দ্রিলা। এই সিরিয়ালেই তাঁর বিপরীতে দেখা গিয়েছিল সব্যসাচী চৌধুরীকে। তবে সেই দেখাতেই যে তাঁরা একে অপরকে মন দিয়ে ফেলেছিলেন, তা নয়। ‘লভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট’-এ মোটেও বিশ্বাসী ছিলেন না ঐন্দ্রিলা। তা হলে কী ভাবে শুরু হল রূপকথা? শুটিং থেকে ছুটি পেলেই বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে মিলে আড্ডা দিতেন ঐন্দ্রিলা। থাকতেন সব্যসাচীও। তার পর ধীরে ধীরে ফোনে কথাবার্তা শুরু। তখনও ভালবাসার কথা স্বীকার করেননি কেউই। কিন্তু মনে রেখে দিয়েছিলেন। অতঃপর পৃথিবীর যাবতীয় প্রেমকাহিনির মতো সব্যসাচী-ঐন্দ্রিলার কাহিনিও গড়িয়ে গিয়েছিল ঈপ্সিত পথে।
আরও পড়ুন: Srijit Mukherji: ‘প্রেমে’ হতাশ নায়িকা, ‘বিদায়’ জানালেন পরিচালক! ঘর ভাঙছে সৃজিত-মিথিলার?
গত ৩১ অক্টোবর সব্যসাচীর জন্য শেষ লেখা লিখেছিলেন ঐন্দ্রিলা— “আমার বেঁচে থাকার কারণ।” আর সব্যসাচীর পুরো পৃথিবী জুড়েই ছিলেন ঐন্দ্রিলা। ১ নভেম্বর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর থেকে দু’চোখের পাতা এক করেননি সব্যসাচী। জোর গলায় বলেছেন, ‘‘নিজে হাতে নিয়ে এসেছিলাম। নিজে হাতেই ওকে ফিরিয়ে নিয়ে যাব।’’ পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার পরেও বিশ্বাস হারাননি তিনি। সমাজমাধ্যমে খোলা আর্জি জানিয়েছিলেন, সকলে যেন ‘অলৌকিক’-এর জন্য প্রার্থনা করেন।
সব্যসাচীর সঙ্গে সেই প্রার্থনা করেছিল বাঙালি। প্রার্থনা করেছিল সমাজ-সংসার-পারিপার্শ্বিক। প্রার্থনা করেছিল গোটা টলিউড ইন্ডাস্ট্রি। সকলেই চেয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা আরও এক বার ফিরে আসুন। ফিরে আসুক সব্যসাচী-ঐন্দ্রিলার জুড়ি। হল না। সব সময় তো সব ইচ্ছে পূরণও হয় না। তবে কিছু কিছু কাহিনি থেকে যায়। অপরূপ রূপকথা হয়ে।
আরও পড়ুন: Aindrila Sharma : লড়াই শেষ, না ফেরার দেশে অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা