প্রয়াত বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী, তথা সুরকার অনুপ ঘোষাল। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। শুক্রবার দুপুর ১.৩০ নাগাদ, দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অনুপ ঘোষাল। বহুদিন ধরেই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। শুক্রবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় সত্যজিৎ রায়ের একাধিক ছবির গায়ক অনুপ ঘোষালের।
সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘গুপি গাইন বাঘা বাইন’ ও ‘হীরক রাজার দেশে’র মতো ছবিতে গান গেয়ে মাতিয়ে দিয়েছিলেন অনুপ। হৃদয় জিতে নিয়েছিল তাঁর গলা। ‘মোরা দু’জনায় রাজার জামাই’ থেকে ‘আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে’ হয়ে ‘এসে হীরক দেশে’, ‘দেখো রে নয়ন মেলে’, ‘ভূতের রাজা দিল বর’, ‘ও মন্ত্রীমশাই’য়ের মতো গান আজও মানুষের মনে। ‘হীরক রাজার দেশে’র জন্য জাতীয় পুরস্কারও পান অনুপ। নজরুলগীতি ও শ্যামাসঙ্গীতেও অনুপের মুন্সিয়ানা কথা বলেছে। তপন সিন্হা পরিচালিত ‘সাগিনা মাহাতো’ চলচ্চিত্রে তাঁর গানও অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ‘মাসুম’ ছবির ‘তুঝসে নারাজ নেহি জ়িন্দেগি’ গানটি অবিস্মরণীয় করে তোলার পিছনেও তাঁর অবদান রয়েছে। বাংলা এবং হিন্দি গানের পাশাপাশি তিনি ভোজপুরি এবং অসমিয়া ভাষায়ও গান গেয়েছেন।
অনুপের রাজনৈতিক পরিচয়ও রয়েছে।২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি হুগলির উত্তরপাড়া বিধানসভা আসন থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। প্রথমবার ভোটে দাঁড়িয়েই জিতেছিলেন অনুপ। সেবছরই পশ্চিমবঙ্গ সরকার বাংলার শিল্পীকে ‘নজরুল স্মৃতি পুরস্কার’ দেয়। ২০১৩ সালে ‘সঙ্গীত মহাসম্মান’ও পান অনুপ। তবে এর পরে আর তাঁকে টিকিট দেয়নি তৃণমূল। রাজনীতির সঙ্গেও বিশেষ যোগাযোগ ছিল না গায়কের।
তাঁর প্রয়াণের খবর পাওয়া মাত্র শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, “অনুপ ঘোষালের প্রয়াণে সঙ্গীত জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি অনুপ ঘোষালের আত্মীয়-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।”