ডিরেক্টর্স গিল্ড থেকে সাসপেন্ড করা হল পরিচালক অরিন্দম শীলকে। শোনা যাচ্ছে, যৌন হেনস্তার অভিযোগ রয়েছে পরিচালকের বিরুদ্ধে। সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি সুব্রত সেন বলেছেন, “সুরক্ষা বন্ধু’ কমিটি ঘোষণার পরেই আমরা জানিয়েছিলাম, পরিচালকদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ-সহ অভিযোগ এলে আমরা পদক্ষেপ করব।” উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে বাংলা বিনোদন দুনিয়ার এক অভিনেত্রী অভিযুক্ত পরিচালকের বিরুদ্ধে অশালীন আচরণের অভিযোগ এনে মহিলা কমিশনের দ্বারস্থ হন।
সুব্রত আরও বলেন, “মহিলা কমিশনের থেকে অভিযোগ আসার পরেই আমরা বিষয়টি নিয়ে সকলে আলোচনায় বসি। সকলের সম্মতিতে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।” সেই অনুযায়ী অনির্দিষ্ট কালের জন্য পরিচালকের বিরুদ্ধে এই বিশেষ নির্দেশ কার্যকর হবে। যে দিন তিনি ‘নির্দোষ’ শংসাপত্র পাবেন, সে দিন থেকে আবার আগের মতো কাজ শুরু করতে পারবেন, জানিয়েছেন সুব্রত। অরিন্দমের নামোল্লেখ না করে এ-ও জানিয়েছেন, এর পরেও পরিচালক যদি স্বাধীন ভাবে কাজ করতে চান বা তাঁর সঙ্গে যদি কোনও প্রযোজক কাজ করেন সে ক্ষেত্রে কোনও বক্তব্য থাকবে না ডিরেক্টর্স গিল্ডের।
শনিবার মেল মারফত অরিন্দম শীলকে এই সাসপেনশনের নোটিস পাঠায় ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া (DAEI)। পরিচালকের সদস্য পদ সংখ্যা ১৯৩। তা উল্লেখ করে জানানো হয়েছে পরিচালকের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ উঠেছে। যার প্রাথমিক প্রমাণ রয়েছে এবং তা অত্যন্ত উদ্বেগের। এমন অভিযোগ সংগঠনের পক্ষে ক্ষতিকর। সেই কারণেই ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিচালককে সাসপেন্ড করা হচ্ছে অথবা যতদিন না পর্যন্ত পরিচালকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হচ্ছে, ততদিন এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলেই জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে পরিচালক জানান, বিষয়টি ‘একটি খুনির সন্ধানে’ সিনেমার সেটে হয়েছে। সাহেব চট্টোপাধ্যায় ও মধুরিমা বসাককে তিনি একটি ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। তা একটি ‘চিট শট’ ছিল। পরিচালক শট বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন। সেই সময় ‘অ্যাক্সিডেন্টালি’ পরিচালকের মুখ অভিনেত্রীর গালে লেগে যায়। আর সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃতভাবেই হয়েছিল। তখন তা নিয়ে অভিনেত্রীর কোনও প্রতিক্রিয়া ছিল না। শুটিংও নির্বিঘ্নে হয়ে যায়। পরে তিনি যৌন হেনস্তার অভিযোগের বিষয়টি জানতে পারেন।
অরিন্দম শীল জানান, তাঁকে মহিলা কমিশনেও ডাকা হয়েছিল। সেখানে তিনি নিজের বক্তব্য জানান। বিষয়টি লিখিতভাবে দেওয়ার কথা বলা হয়। পরিচালক জানান, অনিচ্ছাকৃতভাবেই যে ঘটনাটি ঘটেছে তা তিনি লিখিতভাবেই দিতে যাচ্ছিলেন। তাতে মধুরিমা রাজি ছিলেন না। তখন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের অনুরোধে তিনি অনিচ্ছাকৃত শব্দটি বাদ দেন। সেটিই এখন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। পরিচালকের কথায়, “এই সময়ে দাঁড়িয়ে একজন মহিলা একজন পুরুষের সম্পর্কে বলছেন। এবার সমস্ত কিছু আমার বিরুদ্ধে হয়ে যাবে। ফ্লোরের মধ্যে এমন ঘটনা কীভাবে হতে পারে? আমাকে পুরো ভিলেন করে দেওয়া হল এবং ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন আমাকে শিখণ্ডী দাঁড় করিয়ে দিয়ে এই যে স্বরূপ বিশ্বাস ভার্সেস যার মধ্যে যা কিছু, আমি কোনও কিছুতে নেই। অথচ আমাকে বখরা করে দেওয়া হল। যে প্রচণ্ড সম্মানহানি আমার হয়েছে এবং হতে চলেছে আমার সামাজিক অবস্থান, আমার সমস্ত কিছুতে। আমি ভাবতি পারছি না।” কোন পদক্ষেপ নেবেন? পরিচালকের জবাব, “আমি নিশ্চিতভাবেই আমার আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলব। জানব আমি কী করতে পারি। ”