দক্ষিণী সুপারস্টার আল্লু অর্জুনকে(Allu Arjun) গ্রেপ্তার করল হায়দরাবাদ পুলিশ। তাঁর ছবির প্রিমিয়ারে পদপিষ্ট হয়ে এক মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় ‘পুষ্পা’(Pushpa 2) খ্যাত এই অভিনেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৫ (অনিচ্ছাকৃত খুন) ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আল্লু, নিরাপত্তারক্ষী-সহ তাঁর টিম এবং সন্ধ্যা থিয়েটার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর করে হায়দরাবাদ পুলিশ। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৫, ১১৮ (১), ৩ (৫) ধারায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।
গত ৪ ডিসেম্বর হায়দরাবাদের সন্ধ্যা থিয়েটারে পুষ্পা-২ ছবির প্রিমিয়ার দেখতে গিয়েছিলেন ৩৯ বছর বয়সি রেবতী। সঙ্গে ছিল তাঁর ছেলে। আল্লু অর্জুন সিনেমা হলে পৌঁছতেই তাঁর নাগাল পেতে অনুরাগীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। ভিড়ে পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। যার জেরে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় রেবতী নামে ওই মহিলার। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁর আট বছরের ছেলেকে। আরও বেশ কয়েক জনও সে দিন ভিড়ের মধ্যে আহত হয়েছিলেন। সেই ঘটনায় আল্লুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার তাঁকে চিক্কাদপল্লী থানায় নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। ৫ ডিসেম্বর ‘পুষ্পা ২’ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। তার পর থেকে কয়েকশো কোটি টাকার ব্যবসা করে ফেলেছে এই ছবি।
দক্ষিণের প্রথম সারির এই অভিনেতাকে কেন গ্রেফতার করল পুলিশ? হায়দরাবাদের প্রেক্ষাগৃহে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর ভূমিকা কী ছিল? একাধিক ধারার উল্লেখ করা হয়েছে এফআইআরে। চিক্কদাপল্লী পুলিশ স্টেশনে রেবতীর পরিবারের তরফে একটি FIR দায়ের করা হয়েছিল। প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষ, অনুষ্ঠানের আয়োজক এবং অভিনেতা আল্লু অর্জুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে মৃতার পরিবার। অভিনেতার সিকিউরিটি টিমের বিরুদ্ধেও অভিযোগ ওঠে।
#AlluArjunArrest pic.twitter.com/iTBgJChkQe
— SIVAAAAA 🚁 (@SIVAAAA_18) December 13, 2024
রেবতীর (৩৯) স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর করেছে পুলিশ। ওই এফআইআরের কপি অনুযায়ী, অভিযোগকারীর নাম ভাস্কর মাগুদামপল্লি। তিনি তাঁর স্ত্রী, ন’বছরের পুত্র এবং আট বছরের কন্যাকে নিয়ে ‘পুষ্পা ২’-এর প্রিমিয়ার উপলক্ষে সন্ধ্যা থিয়েটারে গিয়েছিলেন। অভিযোগপত্রে ভাস্কর জানিয়েছেন, রাত ৯টা ১০ মিনিট নাগাদ তাঁরা টিকিট কেটে ছবি দেখতে হলে ঢুকেছিলেন। প্রেক্ষাগৃহে ছিল থিকথিকে ভিড়। রাত ৯টা ৪০ মিনিট নাগাদ অল্লু প্রেক্ষাগৃহে আসেন। ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন কর্তৃপক্ষ। অভিনেতার নিরাপত্তারক্ষীরা ভিড় সরানোর চেষ্টা করেন। এই সময় ধাক্কাধাক্কি হয়। রেবতী এবং তাঁর পুত্র সাই তেজ প্রেক্ষাগৃহের নীচের ব্যালকনিতে ছিলেন। তাঁরা শ্বাস নিতে পারছিলেন না। দমবন্ধ হয়ে আসছিল মা এবং পুত্রের। দু’জনেই ভিড়ের মধ্যে পড়ে যান। ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে রেবতীর মৃত্যু হয়। শিশুটিকে দুর্গাবাই দেশমুখ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর নিয়ে যাওয়া হয় কেআইএমএস হাসপাতালে। অভিযোগ, আগে থেকে পর্যাপ্ত পরিকল্পনা এবং ব্যবস্থা ছাড়াই অভিনেতা হলে চলে এসেছিলেন। প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষও ভিড় নিয়ন্ত্রণের বন্দোবস্ত করেননি।