থেমে গেল সুরেলা সফর। প্রয়াত উস্তাদ রাশিদ খান (Rashid Khan Demise)। বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর। গত কয়েক বছর ধরেই প্রস্টেট ক্যানসারে (Cancer) ভুগছিলেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী রাশিদ খান। গত বছরের ২১ নভেম্বর, ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। তাঁকে ভর্তি করা হয় পিয়ারলেস হাসপাতালে। সেখানেই আজ তাঁর মৃত্যু হয়।
১৯৬৮ সালের ১ জুলাই, উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁতে জন্ম রাশিদ খানের। রামপুর-সাসওয়ান ঘরানার প্রতিষ্ঠাতা ইনায়েত হুসেন খাঁ-সাহিবের প্রপৌত্র উস্তাদ রশিদ খান। এই ঘরানার অন্যতম জনপ্রিয় ও বিখ্যাত শিল্পী। উত্তরপ্রদেশের বদায়ূঁতে জন্ম তাঁর। রশিদ তালিম নিয়েছেন এই ঘরানারই আর এক দিকপাল উস্তাদ নিসার হুসেন খাঁ-সাহিবের কাছ থেকে, যিনি সম্পর্কে তাঁর দাদু। তবে শুধু দাদুর কাছেই নয়, গোয়ালিয়র ঘরানার উস্তাদ গুলাম মুস্তাফা খাঁ-সাহিবের থেকেও তালিম নিয়েছেন তিনি, যিনি সম্পর্কে রশিদের মামা।
রাশিদ খানের বাবাও ছিলেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে পারদর্শী। চার বছরের রাশিদকে বাবাই নিয়ে গিয়েছিলেন উস্তাদ নিসার হুসেন খানের কাছে। তাঁর কাছেই শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে প্রথম নাড়া বাঁধা।এরপর ১৪ বছর বয়সে কলকাতায় আসেন রাশিদ খান। আইটিসি সঙ্গীত রিসার্চ অ্যাকাডেমিতে শুরু হয় সঙ্গীতের পাঠ। তার পর থেকে গিয়েছেন কলকাতাতেই।
শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অন্যতম দিকপাল রশিদ কিন্তু শুধুমাত্র শাস্ত্রীয় সঙ্গীতেই আটকে থাকেননি। হিন্দি ও বাংলা ছবিতেও গান গেয়েছেন তিনি। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও কনটেম্পোরারি সুরের মিশেলে সেই সব গান নতুন জেনারেশেনের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। একবার পন্ডিত ভীমসেন যোশী রশিদ খান সম্পর্কে বলেছিলেন যে, ভারতীয় সঙ্গীতের ভবিষ্যৎ রশিদ খানের হাতে নিশ্চিন্ত। সঙ্গীতের জগতে পন্ডিতজীর মানও রেখেছেন উস্তাদ রশিদ খান। ২০০৬ সালে একই বছরে তিনি ‘পদ্মশ্রী’ ও ‘সংগীত নাটক অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড’ সম্মানে ভূষিত হন। গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে ‘পদ্মভূষণ’ সম্মানে সম্মানিত হন শিল্পী।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হাসপাতালেই রাখা থাকবে মরদেহ। সেখান থেকে বেরিয়ে রাশিদের দেহ নিয়ে যাওয়া হবে পিসওয়ার্ল্ডে। রাতে দেহ থাকবে সেখানে। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় রবীন্দ্র সদনে নিয়ে যাওয়া হবে দেহ। সেখানে শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন তাঁর অগণিত ভক্ত। গান স্যালুট দেওয়া হবে। তার পর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে শিল্পীর দেহ। তার পর নিয়ে যাওয়া হবে টালিগঞ্জ কবরস্থানে। সেখানেই হবে শেষকৃত্য। রেখে গেলেন স্ত্রী, দুই কন্যা এবং এক পুত্রকে।