রোদ্দুর রায়(Roddur Roy) আর বিতর্ক, এককথায় সমার্থক শব্দ। তাঁর নাম শুনলে অনেকেরই মুখে চোখে বিরক্তি ধরা পড়ে, অনেকেই তাঁর নিন্দামন্দ করেন, কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর জনপ্রিয়তা অস্বীকার করা অসম্ভব, একঅর্থে তিনি সোশ্যাল মিডিয়া সেনসেশন। বারবারই নানা বিতর্কে নাম জড়িয়েছে তাঁর, এর পিছনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কারণ তাঁর শব্দচয়ন। ভিডিওতে সাধারণত অশ্রাব্য গালিগালাজ করেন ঐ ব্যক্তি। এই কারণে অনেকেই তাঁর ভিডিও এড়িয়ে চলেন। কিন্তু এই ভিডিও দেখেনও প্রচুর সংখ্যক নেটিজেন আর এই ভিউয়ের বিচারেই ইউটিউব বা সোশ্যাল মিডিয়ায় থেকে প্রতি ভিডিও পিছু ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা রোজগার করেন রোদ্দুর। অশ্রাব্য গালিগালাজে ভরা এইসব ভিডিও থেকে প্রতিমাসে কয়েক লক্ষ টাকা রোজগার করেন রোদ্দুর রায় অর্থাৎ অনির্বান রায়।
অনেকের মতেই, দ্রুত জনপ্রিয়তা আর আয় বাড়াতেই এই পথ বেছে নিয়েছেন রোদ্দুর রায়। আসলে গালিগালাজ ভরপুর রোদ্দুর রায়ের ভিডিয়োর ‘ভিউ’ সংখ্যা রীতিমতো ঈর্ষণীয়। শুধু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন, দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম থেকে রবীন্দ্রনাথ- রোদ্দুর রায়ের কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ করেছেন সকলে।
বাংলা আঞ্চলিক ভাষা হওয়ায় এই ভাষায় ভিডিয়ো তৈরি করলে ‘রিচ’ (বিস্তার) তুলনামূলক কম। তাই জাতীয় স্তরের দর্শক টানতে প্রচুর ইচ্ছাকৃতভাবেই নাকি ভিডিয়োতে ইংরাজি ভাষার প্রয়োগ করে থাকেন রোদ্দুর রায়। মূল লক্ষ্য সেই টাকা ইনকাম। দু থেকে আড়াই লক্ষ জনতা দেখতেন রোদ্দুর রায়ের ভিডিয়ো, যার কনটেন্ট বলতে অশ্রাব্য খিস্তি। আপনার কান গরম হত, আর রোদ্দুর রায়ের পকেট!
আরও পড়ুন: Tollywood: ৫০ লক্ষ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, গল্প চুরির অভিযোগে আইনি নোটিস পেল ‘অপরাজিত’
রোদ্দুর রায়ের প্রোফাইলে প্রকাশিত তথ্য বলছে, গত দুই দশক ধরে বিভিন্ন শিল্প মাধ্যমে সাররিয়্যাল ও পোস্ট মডার্নিস্ট ভাবধারায় নিরন্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন রোদ্দুর রায়। তার আগে বিজ্ঞানের এই মেধাবী ছাত্র জড়িত ছিলেন তথ্য প্রযুক্তি ব্যবসায় গবেষণা ও প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতির সঙ্গে।
গত সপ্তাহে মঙ্গলবার কলকাতার নজরুল মঞ্চে এক অনুষ্ঠানের পর আচমকাই প্রয়াত হন বলিউডের গায়ক কেকে। নজরুল মঞ্চে দর্শক আসনের থেকে বেশি সংখ্যক দর্শকের উপস্থিতি, এসি না চলা, স্টেজে ভিড় করা সহ একাধিক প্রসঙ্গ উঠে এসেছে এই ঘটনায়। কেকের মৃত্যু প্রসঙ্গে ফেসবুক লাইভে এসে রূপঙ্কর বাগচীর মন্তব্য থেকে শুরু করে সেদিন নজরুল মঞ্চে উপস্থিত থাকা তৃণমূল নেতা মদন মিত্রকেও অশালীন ভাষায় আক্রমণ করে রোদ্দুর রায়।
এখানেই সে থেমে থাকেনি। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না নিয়ে তাঁকে দিদি সম্বোধন করেই একের পর এক কুরুচিকর মন্তব্য করতে থাকে রোদ্দুর রায়। শুধুমাত্র নজরুল মঞ্চের ঘটনাই নয়, মমতার প্রশাসনিক বৈঠক নিয়েও প্রশ্ন তোলে সে। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি, দুর্নীতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোপ দাগে রোদ্দুর রায়। অশ্লীল গালিগালাজ করতে পিছপা হয়নি রোদ্দুর রায়। এরপরই তার নামে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে ও তার জেরেই রুজু হয় একাধিক মামলা। সেই মামলার তদন্তে নেমে মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয় রোদ্দুর রায়কে।
আরও পড়ুন: মুক্তোর কারুকাজে পরির সাজ, বেবি বাম্পে হাত রেখে ছবি সোনমের, ভাইরাল