Sandhya Roy Shares Her Memories With Her Husband Late Director Tarun Majumdar

Tarun Majumdar Death: ‘শেষ দেখা হল না’, স্বামী তরুণের প্রয়াণে কান্নায় ভেঙে পড়লেন স্ত্রী সন্ধ্যা রায়

দীর্ঘ দিনের সঙ্গী, সহকর্মী। জীবনের ওঠাপড়ায় ছিলেন পাশে। ব্যক্তিজীবনের টানাপড়েনকে ছাপিয়ে গিয়েছে বন্ধুত্ব। যে বন্ধুত্বের শুরু কয়েক দশক আগে। স্বামীর অসুস্থতার খবর পেয়ে ছুটে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। দিন গুনছিলেন তাঁর ফিরে আসার। কিন্তু তিনি আর ফিরলেন না। সোমবার সকাল ১১.১৭ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পরিচালক তরুণ মজুমদার। দুঃসংবাদ পেতেই ভেঙে পড়েছেন স্ত্রী সন্ধ্যা রায়। গলা বুজে এলো তাঁর। কান্নায় ভেঙে পড়লেন প্রবীণ অভিনেত্রী।

তরুণ-সন্ধ্যার সম্পর্ক তো শুধু আর স্বামী-স্ত্রীর ছিল না, সংসারের গণ্ডী থেকে বেরিয়ে সেদিকে আলোকপাত করলে দেখা যাবে, তাঁদের সম্পর্ক ছিল গুরু-শিষ্যেরও। তরুণের হাত ধরেই বাংলা ইন্ডাস্ট্রি চিনেছিল এক অন্য সন্ধ্যাকে। যে সন্ধ্যা কখনও বাংলা ছায়াছবির পরিবারের দায়িত্বশীল বৌমা, আবার কখনও দুঃখিনী স্ত্রী, আবার কখনও বা জনমদুখিনী মা। সন্ধ্যা রায় (Actress Sandhya Roy) তাঁর ফিল্মি কেরিয়ারের সবথেকে বেশি ছবি করেছেন তরুণ মজুমদারের পরিচালনাতেই।

আজ সেই গুরুবিয়োগে অঝোরে কেঁদে চলেছেন স্বামীহারা স্ত্রী (Sandhya Roy on Tarun Majumdar)। ধরা গলাতেই সন্ধ্যা জানালেন, “সারাজীবন শুঝু কাজ করে গেলেন। কাজের প্রতি এমন নিষ্ঠা, মনোযোগ আর কারও আছে কিনা, বলতে পারব না! বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে একাধিক শিল্পীকে গড়েছেন। কাজের সময় খাওয়াদাওয়া, আড্ডা এসব তাঁর জীবনে ছিল দূরঅস্ত। শেষসময়েও অসুস্থ হয়ে পড়লেন সেই কাজ করতে গিয়েই। কাজের ব্যবস্তার জন্য কতদিন ওঁর মুখটা দেখতে পাইনি…।”

আরও পড়ুন: Rhea Chakraborty: টলিউডে কাজ করবেন রিয়া চক্রবর্তী, জানালেন প্রযোজক রানা সরকার

স্বামীর স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বর্ষীয়াণ অভিনেত্রী বললেন, “দিন কয়েক আগেও ঝাড়গ্রামে লোকেশন দেখতে গিয়েছিলেন। লেখান থেকে ফিরেই হঠাৎ অসুস্থ। হাসপাতালেও দেখতে গিয়েছিলাম। অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়ার পর থেকেই ঈশ্বরের কাছে দিনরাত প্রার্থনা করতাম। যেন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্তু সেটা আর হল কোথায়? উনি আর নেই… আর কী বলব আমি?”, কথাগুলো বলতে বলতে হাউহাউ করে কেঁদে ফেললেন সন্ধ্যা রায়।

সেটের প্রেম পরিণতি পেয়েছিল ছাদনাতলায়। নিঃসন্তান দম্পতি হলেও কাজের সূত্রই তাঁদের বেঁধে রেখছিল একসুতোয়। কত অভিনেতা-অভিনেত্রীদের একসঙ্গে গড়েছেন দুজনে। তরুণ-সন্ধ্যার (Tarun-Sandhya) প্রশিক্ষণে বাংলা সিনে ইন্ডাস্ট্রি পেয়েছিল দেবশ্রী রায়, মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়, অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে নয়না, তাপস পালদের মতো একঝাঁক তারকাকে। উত্তরবঙ্গে কতবার দাদা অরুণ মজুমদারের মেটেলির বাড়িতে তরুণ-সন্ধ্যা একসঙ্গে গিয়েছেন ঘুরতে। সেসব আজ স্মৃতি ফ্রেমে বন্দি। স্বামী তরুণ মজুমদারের মৃত্যুশোকে কথা বলতে পারছেন না সন্ধ্যা রায়। বুজে আসছে তাঁর গলা।

সাল ১৯৬৫। ‘একটুকু বাসা’ এবং ‘আলোর পিপাসা’ ছবি দু’টি বানিয়েছিলেন তরুণ মজুমদার। যথাক্রমে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং বসন্ত চৌধুরী নায়ক। দু’টি ছবিতেই নায়িকা সন্ধ্যা রায়। এই জুটির জনপ্রিয় ছবি ‘ঠগিনী’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘পলাতক’, ‘নিমন্ত্রণ’, ‘কুহেলি’, ‘সংসার সীমান্তে’। এ ছাড়া, ‘বালিকা বধূ’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’-সহ তরুণবাবুর প্রায় সমস্ত ছবিতেই সন্ধ্যা রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।

আরও পড়ুন: Kaali: মা কালীর মুখে জ্বলন্ত সিগারেট, LGBTQ-র পতাকা! তথ্যচিত্র ঘিরে সমালোচনার ঝড়