কেকে-র প্রয়াণে কাঁদছে গোটা দেশ। বাংলার মন ভারাক্রান্ত। এই শহরে এর আগে কতবার এসেছেন কেকে। প্রতিবার বাংলার মানুষ তাঁকে ভালোবাসা উজার করে দিয়েছে। কে জানত এইবার আর পায়ে হেঁটে ফেরা হবে না, তার বদলে ফুল-মালা দিয়ে সাজানো কাঁচের গাড়িতে মুম্বইয়ের বিমান ধরতে রওনা দেবেন কেকে!
এসএসকেএম হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর বুধবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ রবীন্দ্র সদনে কাঠের কফিনে বন্দি গায়কের মরদেহ এসে পৌঁছেছিল। তার আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, কেকে-র দেহ রবীন্দ্র সদন চত্বরে রাখা হবে। কারণ, বাংলায় প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পীদের সেখানেই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়। সেই শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেও। বাঁকুড়ায় প্রশাসনিক বৈঠক কাটছাঁট করে সেখান থেকে সড়কপথে অন্ডাল বিমানবন্দরে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে আকাশপথে কলকাতা।
মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছে প্রয়াত শিল্পীকে গান স্যালুট দেওয়ার ঘোষণা করেই চলে আসেন রবীন্দ্র সদন চত্বরে। ততক্ষণে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কেকে-কে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। সাদা ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে বেদি। সাদা কাপড়ে ঢাকা স্ট্যান্ডে সাদা ফুলে সাজানো হয়েছে শিল্পীর ছবিও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা নিজের হাতে সেখানে রজনীগন্ধার ছড়া সাজিয়ে দেন। ততক্ষণে সেখানে পৌঁছেছেন কেকে-র স্ত্রী জ্যোতি এবং তাঁর পুত্র নকুল। শিল্পীর দেহ রবীন্দ্র সদনে প্রবেশ করার সময় মমতাই এগিয়ে গিয়ে হাত ধরেন জ্যোতির। মুখ্যমন্ত্রীর সামনেই কান্নায় ভেঙে পড়েন কেকে-র স্ত্রী।
আরও পড়ুন: Arijit Singh: ৫ কোটি দাও! আন্ডারওয়ার্ল্ড থেকে হুমকি অরিজিতের কাছেও
গান স্যালুট দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল রবীন্দ্র সদন চত্বরেই। ফাঁকা জায়গায় রাখা হয়েছিল শিল্পীর মরদেহবাহী কফিন। কাঠের কফিনে মুখটুকু দেখার জন্য কাচের আবরণ। প্রয়াত স্বামীর কফিনে ফুল দিতে এসে সেই কাচের কাছে এগিয়ে গেলেন স্ত্রী। একবার উঁকি মেরে দেখলেন নিথর মুখ। পুত্র নকুল কৃষ্ণ কুন্নাথকেও দেখা গেল কফিনে ফুল দিয়ে সেই কাচের চৌখুপির দিকে অপলকে তাকিয়ে থাকতে। এক বার হাত বোলালেন কফিনের উপর। তবে বেশি ক্ষণ নয়। সরে এসে এক পাশে দাঁড়ালেন মায়ের সঙ্গে। রবীন্দ্র সদন চত্বরের আপাত-নৈঃশব্দ্য ভেঙে শুরু হল একুশ গান স্যালুট।
সেই শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পরেই রবীন্দ্র সদন থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হল কফিনবন্দি কেকে-র নশ্বর দেহ। পিছনে তখনও বাজছে তাঁর গলায়— ‘হাম, রহেঁ ইয়া না রহেঁ কাল। কাল, ইয়াদ আয়েঙ্গে ইয়ে পল…।’ কেকে-র স্ত্রী ও পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে সমবেদনা জানান মমতা। এরপর মা উড়ালপুল ধরে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয় গায়কের মরদেহ। আজ বিকাল ৫.১৫-র বিমানে কেকে-র মরদেহ নিয়ে মুম্বই রওনা দেবে পরিবার।
আরও পড়ুন: KK Networth: ৪ টে গাড়ি, চোখ ধাঁধানো বাড়ি, পরিবারের জন্য কত সম্পদ রেখে গেলেন KK