৯ জানুয়ারি বিকেলে চিরতরে স্তব্ধ হয়ে যায় উস্তাদ রাশিদ খানের কণ্ঠ। মাত্র ৫৫ বছরেই ফুরোল তাঁর জীবন সফর। থেকে গেল অসংখ্য গান এবং তাঁর অগণিত ভক্ত। গত মঙ্গলবার তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর মরদেহ পিস হেভেনে রাখা হয়েছিল। বুধবার, সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে নাকতলার বাড়ি থেকে রাশিদের মরদেহ রবীন্দ্রসদনে নিয়ে আসা হয়। তার পর শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে অনুরাগীদের ভিড় উপচে পড়ে।
উপস্থিত ছিলেন শিল্পীর পরিবার এবং নিকটাত্মীয়রা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ইন্দ্রনীল সেন, দেবাশিস কুমার, রাজ চক্রবর্তী। বেলা ১টা নাগাদ শিল্পীকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। রাশিদকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সঙ্গীত জগৎ থেকে উপস্থিত ছিলেন হৈমন্তী শুক্ল, ঊষা উত্থুপ, তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার, দেবজ্যোতি বসু, সমর সাহা প্রমুখ। রাশিদকে শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পর তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় শিল্পীর বাসভবনে।
১৯৬৮ সালের ১ জুলাই উত্তরপ্রদেশের বদায়ূঁতে জন্ম রাশিদের। তিনি রামপুর-সাসওয়ান ঘরানার শিল্পী। যে ঘরানার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ইনায়েত হুসেন খাঁ-সাহিব। রাশিদ তালিম নিয়েছেন এই ঘরানারই আর এক দিকপাল শিল্পী নিসার হুসেন খাঁ-সাহিবের কাছ থেকে। তিনি ছিলেন রাশিদের দাদু। ১০-১১ বছর বয়সে কলকাতা চলে আসেন রাশিদ। সঙ্গীত রিসার্চ অ্যাকাডেমির স্কলারশিপ নিয়ে দাদু নিসার হুসেনের কাছে গান শেখা শুরু। তার পর থেকে গিয়েছেন কলকাতাতেই। বুধবার কলকাতা থেকে শিল্পীর মরদেহ পাড়ি দেবে বদায়ূঁ। তাঁর জন্মস্থানে। সেখানেই সমাধিস্থ করা হবে তাঁকে।
বহুদিন ধরেই রাশিদ খানের ক্যানসারের চিকিৎসা চলছিল। তাঁর প্রস্ট্রেট ক্যানসার হয়েছিল। সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে শহরের বাইরে নিয়ে গিয়ে তাঁর বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়। এরপর থেকেই বছর ৫৫ এর এই শিল্পীর একটার পর একটা সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। হামেশাই তাঁর প্লেটলেট নেমে যেত। এরপর ২১ নভেম্বর তাঁর স্ট্রোক হওয়ায় স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তাঁকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবশেষে সেখানেই মঙ্গলবার বিকেল ৩টে ৪৫ মিনিটে প্রয়াত হন তিনি। রেখে গেলেন স্ত্রী, দুই কন্যা এবং এক পুত্রকে।