শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সারা বিশ্বে শিশুর মেধা বিকাশে সুপার ফুড হিসেবে কাজ করে ডিম। ডিমের পুষ্টিগুণ শিশুর শুধু মেধাই বিকাশ করে না, চোখেরও শতভাগ সুরক্ষা নিশ্চিত করে। তাই শিশুর ডায়েটে ডিম রাখাটা অত্যন্ত জরুরি।
আগে মনে করা হত, দু-বছর বয়স পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত শিশুর খাদ্যে ডিম রাখা মোটেও উচিত নয়। তবে বর্তমানে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যে বয়স থেকে শিশু কঠিন খাবার চিবিয়ে খেতে শিখবে, তখন থেকেই ডিম খাওয়ানো যেতে পারে। অর্থাত্, ছয় মাস বয়স থেকেই শিশুকে ডিম খাওয়ানোর অভ্যাস করা উচিত।
বিশেষজ্ঞদের মতে যে সব খাবার অ্যালার্জির প্রবণতা থাকে, সেই সব খাবার যত তাড়াতাড়ি বাচ্চাকে খাওয়ানো শুরু করা উচিত। এই ধরনের খাবার বাচ্চাকে খাওয়ানো শুরু করতে যত দেরি করা হবে, ততই সেই খাবার থেকে তার অ্যালার্জি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। পুষ্টিবিদদের মতে, ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুকে ডিম ভালো করে সিদ্ধ করে শুধু কুসুমটুকু খাওয়াতে হবে। এই কুসুম ভাত, সবজি কিংবা জল বা বুকের দুধ/ ফর্মুলা মিল্কের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন। এই বয়সে কোনোভাবেই শিশুকে ডিমের সাদা অংশ খাওয়ানো যাবে না।
আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিকসের মতে, শিশুকে নতুন নতুন খাবারের সঙ্গে পরিচয় করাতে অন্তত তিন দিন অপেক্ষা করা উচিত বলে মনে করছেন তারা। এ হিসাবে যখনই শিশুকে ডিম খাওয়ানোর অভ্যাস করানো শুরু করবেন, তখন সপ্তাহের তিন দিন আগে শিশুকে কোনো নতুন খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস বন্ধ রাখুন। আর ডিম খাওয়ানো শুরুর দিন থেকে তিন দিন পর্যন্ত অন্য নতুন খাবার খাওয়ানোও বিরত রাখুন। তবে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে ডিম খাওয়ানো বন্ধ রেখে অতি দ্রুত কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শিশুর ১ বছর পূর্ণ হলে সম্পূর্ণ ডিমই শিশুকে খাওয়ানো যাবে। মেধার সঠিক বিকাশে শিশুকে এই বয়সে প্রতিদিনই একটি করে ডিম খাওয়ান। ১ বছরের উপর থেকে ৩ বছর পর্যন্ত শিশুর প্রতিদিনের প্রোটিন চাহিদা থাকে ১৪ গ্রাম। সাধারণত একটি সিদ্ধ ডিমে ৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে। তবে প্রতিদিন ডিম্ না দিয়ে শিশুর ডায়েটে ডাল, মাংস বা মাছ রাখাও উচিত।