কাঠের গুদামে আগুন লেগে ১১ শ্রমিকের মৃত্যু হল। সেকেন্দরাবাদের অই গুদামে বুধবার ভোরে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। শ্রমিকরা সবাই পরিযায়ী। তাঁরা বিহার থেকে এসেছিলেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ভোইগুডায় একটি কাঠের কারখানায় কাজ করতেন তাঁরা। কারখানার গুদামের ঠিক উপরের তলাতেই শ্রমিকরা থাকতেন। আগুন লাগার পরই এক শ্রমিক কোনও রকমে দোতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে নিজের প্রাণ বাঁচান। কিন্তু বাকিদের সেই সৌভাগ্য হয়নি। দমকল জানিয়েছে, এত জন শ্রমিকের একসঙ্গে মৃত্যু হত না, যদি বেরনোর পথ ঠিক থাকত। নীচে নামার জন্য ঘুরন্ত সিঁড়ি ছিল। কিন্তু সেই সিঁড়ি দিয়ে এত জন একসঙ্গে নেমে আসার সুযোগ পাননি। প্রাথমিক ভাবে দমকল মনে করছে, তাঁরা পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু প্রচণ্ড ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে অচৈতন্য হয়ে পড়েন সকলেই। তার পরই আগুনের গ্রাসে ঝলসে যায় ১১ জন শ্রমিকের দেহ।
Secunderabad fire: 4-5 workers managed to escape. One rescued person is in critical condition at the Gandhi Hospital https://t.co/GWkcMwwyz3 pic.twitter.com/pHxwjbeXox
— The Indian Express (@IndianExpress) March 23, 2022
দমকল জানিয়েছে, দেহগুলি এমন ভাবে ঝলসে গিয়েছে যে চেনার উপায় নেই। দেহগুলি উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার পরই দেহগুলি শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন এক পুলিশ আধিকারিক। কী ভাবে আগুন লাগল, তা খতিয়ে দেখছে দমকল।
পুলিশ কমিশনার সি ভি আনন্দ জানিয়েছেন, “গত তিন বছর ধরে এই গুদামে শ্রমিকরা কাজ করতেন। মাসে ১২ হাজার টাকা বেতন পেতেন তাঁরা। এই টাকায় আশেপাশে ঘর ভাড়া নেওয়া সম্ভব নয় বলেই, গুদামের একতলায় একটি ঘরে তাঁরা শুতেন। বেশ কয়েকজন ঘুমের মধ্যেই ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মারা যান। একতলায় তাঁরা আটকে পড়েন। প্রেম নামে এক যুবক লাফ দিয়ে পালান। আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুদামে অবৈধভাবে প্লাস্টিকের, ইলেকট্রিকের তার রাখা ছিল। গুদামের মালিকের খোঁজ চলছে। নিয়ম লঙ্ঘন হলে তাঁকে গ্রেফতার করা হবে।”
মৃতদের নাম বিট্টু, সিকন্দর, দীপক, পঙ্কজ, রাজেশ, রাজু, চিন্টু, দীনেশ, সত্যেন্দর এবং দামোদর। এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। তিনি মৃতদের পরিবারগুলিকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।