দেওয়াল লিখন কি তিনিও আগেই পড়তে পেরেছিলেন? বুঝতে পেরেছিলেন কি সময় বেশি নেই? তাই কি পকেট থেকে শেষ সম্বল হিন্দুত্বের তাস বের করেছিলেন মহারাষ্ট্রের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে? কুর্সি বাঁচাতে মরিয়া হয়েই কি নাম বদলের খেলায় মাতলেন? আপাতত এই প্রশ্ন ঘুরছে রাজনৈতিক মহলে।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টে আস্থাভোটের শুনানি শুরু হবে ঠিক তার আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ডেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেন উদ্ধব ঠাকরে। দীর্ঘদিনের দাবি মেনে মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদের (Aurangabad) নাম ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের ছেলে শম্ভাজির নামে করার সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্ত্রিসভার বৈঠকে উদ্ধবের দেওয়া প্রস্তাব পাশও হয়ে গিয়েছে। এখন থেকে ঔরঙ্গাবাদের নাম হবে শম্ভাজি নগর (Shambhaji Nagar)। একই সঙ্গে নাম বদলানো হয়েছে অসমানাবাদ শহরেরও। ওই এলাকাটির নতুন নাম দেওয়া হয়েছে দারাশিব। দু’টি সিদ্ধান্তই উদ্ধব নিয়েছেন মূলত নিজের হিন্দুত্ববাদী ভাবমূর্তি রক্ষা করতে।
আরও পড়ুন: Rice Price Hike: আটার পর হু হু করে বাড়ছে চালের দাম, পকেটে টান মধ্যবিত্তের
সূত্রের খবর, এই নাম বদলের প্রস্তাবে একেবারেই রাজি ছিল না শিব সেনার (Shiv Sena) জোটসঙ্গী এনসিপি (NCP)। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিদ্রোহী শিব সেনা নেতারা অভিযোগ এনেছিলেন উদ্ধব জোটসঙ্গীদের চাপে পড়ে হিন্দুত্ববাদ বিসর্জন দিচ্ছেন। সেই অভিযোগ খণ্ডন করতেই এদিন পুরোপুরি হিন্দুত্ববাদের তকমা সাঁটা দুটি সিদ্ধান্ত নিলেন মহারাষ্ট্রের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
নব্বইয়ের দশকে প্রথম অওরঙ্গাবাদের নাম বদলের দাবি তুলেছিলেন বালাসাহেব। কিন্তু পরবর্তী সময়ে শিবসেনা-বিজেপি জোটের মন্ত্রিসভা নাম বদলের বিষয়ে সরকারি স্তরে কোনও পদক্ষেপ করেনি। ২০১৯ সালে মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোটের পরে ন্যূনতম অভিন্ন কর্মসূচির ভিত্তিতে কংগ্রেস এবং এনসিপি-র সঙ্গে জোট সরকার গড়েছিল শিবসেনা। সেই কর্মসূচির অন্যতম অংশ রাজ্যে ধর্মনিরপেক্ষতার আবহ রক্ষা করা।
কিন্তু বিদ্রোহী নেতা একনাথ শিন্ডের ‘হিন্দুত্বের স্লোগান’ কাড়তে মরিয়া উদ্ধব ফের অওরঙ্গাবাদের নাম বদলের বিষয়টি সামনে আনেন। ঘটনাচক্রে, গত এক সপ্তাহে বার বার শিন্ডে অভিযোগ তুলেছেন, বালাসাহেব ঠাকরের হিন্দুত্বের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছেন উদ্ধব। সেই অভিযোগ খন্ডাতেই কি এই পদক্ষেপ নিলেন তিনি? নাকি বিজেপি যাতে পরবর্তী সময়ে এই নাম বদলের কৃতিত্ব নিতে না পারে সেই কারণে এই কাজ করলেন?
আরও পড়ুন: স্ত্রীর ভরণ-পোষণের সম্পূর্ণ দায়িত্ব স্বামীর নয়! রায় দিল্লি হাইকোর্টের