ট্রান্সফার (Transfer) চেয়ে অফিসের বসের কাছে আবেদন করেছিলেন এক সরকারি কর্মচারী। জবাবে তাঁকে বলা হয়েছিল, ট্রান্সফার চাইলে ‘এক রাতের জন্য বউকে পাঠাতে হবে’। ক্ষুব্ধ ও অপমানিত হয়ে সেই সরকারি কর্মচারী আত্মহত্যার (Suicide) পথ বেছে নিলেন। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের লখিমপুরে (Lakhimpur)। মৃতের নাম গোকুল প্রসাদ (Gokul Prasad)। তিনি বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মচারী ছিলেন। ৪৫ বছরের গোকুল লখিমপুরে জুনিয়র ইঞ্জিনিয়রের অফিসের (Junior Engineer’s Office) বাইরে নিজের গায়ে ডিজেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার তাঁর মৃত্যু হয়।
বছর ৪৫-এর গোকুল প্রসাদ ছিলেন পেশায় উত্তরপ্রদেশের বিদ্যুৎ বিভাগের লাইনম্যান। কাজের জায়গা দূরে হওয়ায় বদলির আর্জি নিয়ে প্রায়ই যেতেন জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার নগেন্দ্র প্রসাদের কাছে। অভিযোগ, সেখান থেকেই প্রস্তাব আসে, ‘বদলি চাইলে বৌকে এক রাতের জন্য পাঠিয়ে দাও’। স্ত্রীর উদ্দেশে এমন অসম্মানজনক মন্তব্য মেনে নিতে না পেরে জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের দফতরের সামনেই নিজের গায়ে ডিজেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। প্রাথমিক ভাবে নগেন্দ্র এবং দফতরের এক কেরানিকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। পুলিশ আত্মহত্যায় প্ররোচনার একটি মামলা দায়ের করেছে।
আরও পড়ুন: মাতৃভাষা বা স্থানীয় গুরুত্বহীন, ফের একবার হিন্দির পক্ষেই ব্যাটিং করলেন শাহ
এর পরেই একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে, যাতে বোমা ফাটিয়েছেন প্রয়াত গোকুলের স্ত্রী। ক্যামেরার সামনে তিনি অভিযোগ করেছেন, নগেন্দ্র এবং তাঁর এক সঙ্গী গোকুলকে তাঁর স্ত্রীর নাম করে কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন। গত তিন বছর ধরে ওই দু’জন নিয়মিত গোকুলকে নানা ভাবে হেনস্থা করতেন। গোকুলের স্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘এর ফলে আমার স্বামী অবসাদের শিকার হন। তিনি ওষুধও খেতেন। কিন্তু তার পরেও ওরা ওঁকে ছাড়েনি। ওঁকে আলিগঞ্জে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে সমস্যা হচ্ছিল বলে উনি বাড়ির কাছাকাছি বদলির আবেদন জানান। তখনই ওঁকে বলা হয়, ‘বদলি চাইলে একটা রাতের জন্য স্ত্রীকে পাঠিয়ে দাও’।’’ একই সঙ্গে স্বামীহারা মহিলার অভিযোগ, ‘‘গায়ে আগুন লাগানোর পরেও কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি। ’’
পুলিশ কর্তা সঞ্জীব সুমন বলেছেন, ‘‘আমরা মামলা দায়ের করেছি। ওই জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করেছে দফতর। আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।’’