পঞ্জাবের মালেরকোটলা জেলার একটি আদালত শনিবার ২০১৬ সালের কুরআন অবমাননা মামলায় দিল্লির মাহারলি এলাকার বিধায়ক নরেশ যাদবকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ও সেশন বিচারক পারমিন্দর সিং গ্রেওয়াল শুক্রবার নরেশ যাদবকে দোষী সাব্যস্ত করেন এবং শনিবার রায় ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে নরেশ যাদবকে ১১,০০০ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। রায় ঘোষণা করার সময় অভিযুক্ত আপ বিধায়ক আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৬ সালের ২৪ জুন। মালেরকোটলা এলাকার রাস্তায় কোরান ধর্মগ্রন্থের বেশ কিছু পাতা ছিঁড়ে ছড়ানো হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় হিংসার পরিবেশ তৈরি হয়। একদল বিক্ষুব্ধ জনতা স্থানীয় এলাকার কিছু গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। ঘটনায় আপ বিধায়ক-সহ চার জন গ্রেপ্তার হন।
নরেশ যাদবকে ২০২১ সালের মার্চ মাসে কোরান অবমাননা মামলার অভিযোগ থেকে খালাস করে নিম্ন আদালত। তবে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আপ বিধায়কের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন মহম্মদ আশরাফ নামক এক ব্যাক্তি। প্রাথমিকভাবে বিজয় কুমার এবং গৌরব কুমারের বিরুদ্ধে মামলায় দায়ের হয়। এর পর পারিপার্শ্বিক তথ্য এবং ঘটনায় আটক আরও ব্যক্তিদের বয়ানের ভিত্তিতে আপ বিধায়ক নরেশ যাদবের নামও এই মামলায় যুক্ত করা হয়। আপ বিধায়ক যদিও সমস্ত দোষ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, ভুয়ো মামলায় ফাঁসানো হয়েছে তাঁকে। তাঁর এবং দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার প্রচেষ্টা এটি।
আপ বিধায়কের কারাবাসের সাজা নিয়ে ফুঁসে উঠেছে কেজরিওয়ালের দল। পাল্টা এলাকার শান্তি বিঘ্নিত করার অভিযোগ তুলেছে BJP এবং শিরোমনি অকালি দল। কারণ ঘটনাটি ঘটেছিল তাদের ক্ষমতায় থাকার সময়েই। দিল্লির বিরোধী দলনেতা প্রতাপ সিং বাজওয়া এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘অরবিন্দ কেজরিওয়াল নিজে কোরান অবমাননা মামলায় দোষীদের সাজা ঘোষণার কথা বলেছিলেন। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে তাঁর নিজের দলের বিধায়ক মেহরুলি নরেশ যাদবই এই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। ওদের আসল চরিত্র প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে। এখন ভগবন্ত মান চুপ কেন?’
শিরোমনি অকালি দলের নেতা দলজিৎ সিং চীমা বলেন, ‘এই রায়টি প্রমাণ করে দেয় যে পঞ্জাবে ধর্মীয় গ্রন্থের অবমাননার পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র ছিল। এই তাই আপের মুখোশ খুলে দিয়েছে। এখন কেজরিওয়ালকে দেশের কাছে ব্যাখ্যা করতে হবে কেন তার দলের বিধায়ক এমন একটি ন্যক্কারজনক অপরাধে লিপ্ত হয়েছেন?’