ফিকে হলেন স্মৃতি। উত্তরপ্রদেশের আমেঠি গড় পুনরুদ্ধারের পথে কংগ্রেস। আমেঠি লোকসভা কেন্দ্রে স্মৃতি ইরানির থেকে ১ লাখ ৫৭ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন কিশোরীলাল শর্মা। যা থেকে ইঙ্গিত, কিশোরীলালের হাত ধরেই পুরনো গড় ফিরতে চলেছে কংগ্রেসের কাছে।
উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে আমেঠি ও রায়বরেলি এই দুই কেন্দ্র গান্ধী পরিবারের গড় হিসেবে পরিচিত। ২০১৪ সালে এই কেন্দ্রে রাহুলের কাছে ১ লক্ষের বেশি ভোটে পরাজিত হন স্মৃতি ইরানি। তবে গোটা দেশকে অবাক করে ২০১৯ সালে রাজীবপুত্রকে এখানে ধরাশায়ী করেন খোদ মোদীর আশীর্বাদধন্য প্রার্থী স্মৃতি ইরানি। এই সাফল্যের পুরস্কার হিসেবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্বের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। তবে ৫ বছরেই পালাবদলের আভাস মিলল এই কেন্দ্রে। শেষ পাওয়া খবরে, এই কেন্দ্রে প্রায় ১ লক্ষ ২১ হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছেন কিশোরীলাল শর্মা। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৪ লক্ষ ১৫ হাজার ৪৫০। অন্যদিকে, এখনও পর্যন্ত স্মৃতি পেয়েছেন ২ লক্ষ ৯৪ হাজার ৫৮১ ভোট। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ব্যবধান থেকেই স্পষ্ট, আমেঠি আবারও কংগ্রেসেই ভরসা রাখল। খুব বড় অঘটন না ঘটলে জয় প্রায় নিশ্চিত কিশোরীলালের।
রাজনৈতিক মহলের দাবি, এই কেন্দ্র বিজেপির হাত থেকে পুনরুদ্ধার করতে এবার চেষ্টার কোনও কসুর করেনি কংগ্রেস। যার প্রথম পদক্ষেপ হল এখানে কে এল শর্মাকে প্রার্থী করা। কারণ, সেই রাজীব গান্ধীর আমল থেকে এই কেন্দ্রকে হাতের তালুর মতো চেনেন কিশোরীলাল। শুধু তাই নয়, লাগাতার এখানে প্রচার চালিয়েছেন গান্ধী পরিবারের আর এক সদস্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। একদিকে, সংবিধান রক্ষার বার্তার পাশাপাশি বারবার প্রচারে এসে তাঁরা তুলে ধরেছেন সেই ইন্দিরা গান্ধীর আমল থেকে আমেঠির অতীত ইতিহাস। রাজনৈতিক মহলের দাবি, একদিকে আমেঠির সহানুভুতির অঙ্ক। অন্যদিকে, দক্ষ ভোটকুশলী কিশোরীলালকে প্রার্থী করা। এই দুই চালেই বিজেপির দখল মুক্তির পথে আমেঠি কেন্দ্র।
অন্যদিকে স্মৃতির হারের কারণ হিসেবে রাজনৈতিক মহলের অনুমান, সাংসদ হওয়ার পর আমেঠিতে প্রতিশ্রুতি পুরণে ব্যর্থ হন স্মৃতি ইরানি। জিতলে ৫০০ টাকার সিলিন্ডার, ১৩ টাকার চিনি-সহ আরও একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তা তো পূরণ করেননি উলটে ভোটের আগে উগ্র হিন্দুত্বকে হাতিয়ার করে মাঠে নামে গেরুয়া বাহিনী যা ভালোভাবে নেয়নি আমেঠির জনতা।যার পরিণতি ‘গান্ধী গড়’ আমেঠিতে ‘স্মৃতি’ হলেন ইরানি।