গরু পাচার মামলায় বড় রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। দেশের শীর্ষ আদালতের রায়ে জামিন পেলেন বীরভূমের বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডল। তবে এখনই তিহাড় জেল থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না তিনি। শুধুমাত্র সিবিআইয়ের করা মামলায় জামিন পেয়েছেন অনুব্রত। ইডির মামলায় এখনও জেলবন্দি থাকতে হচ্ছে তাঁকে।
২০২২ সালের অগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময় বীরভূমের নিচুপট্টি এলাকায় নিজের বাড়ি থেকেই গ্রেফতার হয়েছিলেন অনুব্রত। তাঁকে প্রথমে গ্রেফতার করে সিবিআই। প্রথমে আসানসোল সংশোধনাগারে রাখা হয়েছিল কেষ্টকে। পরে তিহাড় জেলে নিয়ে যাওয়া হয় তৃণমূল নেতাকে। তখন থেকে তিহাড়েই বন্দি অনুব্রত। এই একই মামলায় ওই বছরের নভেম্বর মাসে ইডিও তাঁকে গ্রেফতার করেছিল।
সিবিআইয়ের মামলায় জামিন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনুব্রত। সেই মামলার শুনানিতে তাঁর পক্ষের আইনজীবী সওয়াল করার সময় বার বার জানিয়েছেন, গরু পাচার মামলায় অন্যান্য অভিযুক্তেরা ছাড়া পাচ্ছেন। কিন্তু তাঁর মক্কেলকে আটকে রাখা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে অনুব্রতের জামিনের বিরোধিতা করা হয় বার বার। সওয়ালে তারা জানায়, এই মামলায় অনুব্রতই মূল অভিযুক্ত। জামিন পেলে তিনি সাক্ষ্যপ্রমাণ নষ্ট করতে পারেন। সেই কারণে বেশ কয়েক বার বীরভূমের তৃণমূল নেতার জামিন খারিজ হয়।
মঙ্গলবার জামিন মামলার শুনানিতেও অনুব্রতের আইনজীবী মুকুল রোহতগি আদালতে বলেন, ‘‘এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত এনামুল হক জামিন পেয়েছেন। কিন্তু কিসের ভিত্তিতে আমার মক্কেলকে আটকে রাখা হচ্ছে। এখনও বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়নি। যদি অভিযোগ থাকে, তবে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করুক।’’ বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদীর ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআইয়ের উদ্দেশে প্রশ্ন করে, ‘‘কবে থেকে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হবে?’’ তার উত্তরে সিবিআইয়ের আইনজীবী এসভি রাজু আদালতে জানান, খুব শীঘ্রই বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হবে।
সওয়াল-জবাব শেষে শর্তসাপেক্ষে অনুব্রতের জামিন মঞ্জুর করে সুপ্রিম কোর্ট। জামিন দেওয়ার সময় শীর্ষ আদালত তিনটি শর্ত দিয়েছে। বলা হয়েছে, অনুব্রতকে পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। পাশাপাশি বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হলে তাতে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে এবং তৃতীয়ত, কোনও ভাবেই সাক্ষীদের উপর প্রভাব খাটাতে পারবেন না অনুব্রত।
কিন্তু সিবিআইয়ের মামলায় জামিন মিললেও এখনই জেলমুক্তি হচ্ছে না অনুব্রতর। কারণ, ইডির মামলায় জামিন পাননি তিনি। ফলে আপাতত তিহাড়েই থাকতে হবে কেষ্টকে। প্রসঙ্গত, অনুব্রতর গ্রেপ্তারির পর থেকে একাধিকবার তার হয়ে সওয়াল করেছেন মমতা ব্যানার্জি। দাবি করেছেন চক্রান্ত করা হয়েছে। এমনকী ভোট থেকে দূরে রাখতে অনুব্রতকে বন্দি করে রাখা হয়েছে বলেছিলেন তিনি। দাবি করেছিলেন, ভোট মিটলেই জামিন দেওয়া হবে অনুব্রতকে। কার্যত সেই দাবিই সত্যি হল।