পুলিশকে শিক্ষিত করতে হবে। বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা কাকে বলে, তা শেখাতে হবে পুলিশকে। সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা মানেই অপরাধ নয়, তা বোঝাতে হবে পুলিশকে। পুলিশ যদি এমনটা মনে করে, তাহলে আর গণতন্ত্র টিকবে না। সংবিধান দেশের নাগরিকদের যে বাকস্বাধীনতা দিয়েছে, সেই সম্পর্কে পুলিশকে সংবেদনশীল হতে হবে।এক মামলার শুনানিতে এভাবেই পুলিশ তথা সরকারকে তুলোধনা করল শীর্ষ আদালত।
মামলার বয়ান অনুযায়ী, অধ্যাপক জাভেদ আহমেদ হাজমের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩ এ ধারার(সাম্প্রদায়িক বৈষম্য প্রচার) অধীনে একটি এফআইআর দায়ের করেছিল পুলিশ। অধ্যাপক জাভেদ হোয়াটসঅ্যাপে পোস্ট করেছিলেন, ৫ অগস্ট – জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য ‘কালো দিবস’ এবং ১৪ অগস্ট – ‘পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা।’ এই দুটি পোস্টই আপত্তিকর বিবেচনা করে অধ্যাপকের বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্রের কোলহাপুরে একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে এফআইআর বাতিলের আর্জি জানিয়ে তিনি প্রথমে বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্ত হয়েছিলেন।কিন্তু, বম্বে হাইকোর্টে স্বস্তি মেলেনি। এরপর তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্ত হন।
ওই মামলাতেই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল,”রাষ্ট্রের সমালোচনা মানেই সেটা অপরাধ নয়। তেমন হলে এতদিন গণতন্ত্রের অস্তিত্ব টিকে থাকত না। ভারতের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯১(১)(এ) প্রত্যেক নাগরিককে মতপ্রকাশের অধিকার দেয়। সেই অনুচ্ছেদই প্রত্যেক নাগরিককে ৩৭০ ধারা বাতিলের বা সরকারের অন্য কোনও সিদ্ধান্তের সমালোচনার অধিকার দেয়। সরকারি সিদ্ধান্ত তিনি খুশি নাকি অখুশি, সেটা বলার অধিকার সব নাগরিকেরই আছে।”
বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি উজ্জল ভূঁইয়ার বেঞ্চ বলেছে, ৫ অগস্ট দিনটিকে ‘কালা দিবস’ বলা, ‘বিক্ষোভ ও বেদনার বহিঃপ্রকাশ’। পাকিস্তানের জনগণকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানানো একটা ভাল কাজ। এতে বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা বা অসন্তুষ্টির অনুভূতি তৈরি হবে, তা বলা যায় না।