‘ওরা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে মেরে ফেলতে চায়!’ রবিবার ইন্ডিয়া জোটের মহাসভায় ফের অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে তিহাড় জেলে খুনের চক্রান্তের অভিযোগ তুললেন কেজরি জায়া সুনীতা। আপ সুপ্রিমোকে জেলে ইনসুলিন দেওয়া হচ্ছে না বলে সোচ্চার হলেন তিনি।
রবিবার রাঁচিতে ‘বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের’ সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি দাবি করেন, “দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে জেলেই হত্যার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। কেজরিওয়ালের প্রতিটি খাবারে নজরদারি চলছে। উনি সুগার রোগী এবং ১২ বছর ধরে ইনসুলিন নিচ্ছেন।” বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে সুনীতা বলেন, “জেলে কেজরিওয়ালকে ইনসুলিন নিতে দেওয়া হচ্ছে না। ওরা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে মেরে ফেলতে চাইছে।”
সুনীতা বলেন, ‘‘গত ১২ বছর ধরে রোজ ৫০ ইউনিট করে ইনসুলিন নেন কেজরীওয়াল। জেলে তাঁকে সেটা দেওয়া হচ্ছে না। ওরা কেজরীর ভাবনা বোঝে না। কেজরী খুবই সাহসী। সিংহের মতো। জেলে বসেও ওঁর চিন্তা ভারতমাতাকে নিয়ে।’’ সুনীতা এও দাবি করেছেন যে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে দোষী প্রমাণিত করার আগেই জেলে ভরেছে বিজেপি। একে ‘একনায়কতন্ত্র’ বলে, দাবি সুনীতার। তাঁর কথায়, ‘‘ওরা কেজরীওয়াল এবং হেমন্ত সোরেনকে জেলে ভরেছে দোষী প্রমাণ হওয়ার আগেই। একে বলে একনায়কতন্ত্র। আমার স্বামীর দোষ কী? ভাল শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা দিচ্ছিলেন তিনি?’’ সুনীতার আরও দাবি, দিল্লির মানুষজনের জন্য নিজের জীবন দিয়েছেন কেজরী। তিনি আইআইটি থেকে পাশ করেছেন। বিদেশ গিয়ে থিতু হতে পারতেন। কিন্তু দেশপ্রেমের কারণে তা করেননি। তাঁর কথায়, ‘‘আইআরএস অফিসার হয়েও মানুষের সেবা করবেন বলে চাকরি থেকে ছুটি নিয়েছেন। মানুষের জন্য জীবন বাজি রেখেছেন।’’
কেজরিওয়ালের রক্তে শর্করার মাত্রার পরিমাণ অনেকটাই বেশি, প্রথম থেকেই এমন দাবি জানিয়ে আসছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তাই তাঁকে জেলে বাড়ির খাবার খেতে দেওয়া হোক, এমনও আবেদন করেন তিনি। জেলের মধ্যে ইনসুলিন নেওয়ার দাবি তুলে দু’দিন আগেই দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে মামলা করেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। রবিবার আরও এক ধাপ এগিয়ে সরাসরি কেজরিওয়ালকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলে আক্রমণ করলেন সুনীতা।
এদিকে এদিনই তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষের একটি চিঠি প্রকাশ করেছে আপ (AAP)। তাতে দেখা যাচ্ছে, কেজরিওয়ালের জন্য একজন ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যবস্থা করুন, এই মর্মে এইমসের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন দিল্লির জেল কর্তৃপক্ষ। সেই চিঠিকে হাতিয়ার করেই আপের তোপ, জেল কর্তৃপক্ষ বার বার বলেছেন, সেখানে নাকি পর্যাপ্ত ওষুধ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু এই চিঠি থেকেই সাফ বোঝা যায় সেই দাবি একেবারে ভিত্তিহীন। যদিও পরে জেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আপাতত সুস্থ। এইমসের এক চিকিৎসক তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করেছেন।