Babri Masjid: New NCERT textbook does not mention Babri Masjid by name, calls it ‘three-dome structure’ instead

Babri Masjid: NCERT-র পাঠ্যবই থেকে বাদ বাবরি মসজিদ, নেই করসেবা ও ধ্বংসের বিবরণও

১৯৯২ সালে অযোধ্যার মাটি থেকে বাবরির স্তম্ভে প্রথম আঘাত হেনেছিল কর সেনারা। কালের সরনি বেয়ে সেখানে বাবরির অস্তিত্ব চিরতরে মুছে এখন গড়ে উঠেছে রাম মন্দির। এবার মোদী সরকারের জমানায় এনসিইআরটি-এর (NCERT) রাষ্ট্র বিজ্ঞানের সিলেবাস থেকেও মুছে দেওয়া হল বাবরির অস্তিত্ব। কার্যত এমনভাবেই যেন কোনও কালে বাবরি নামে কোনও মসজিদ ছিল না অযোধ্যায়।

সম্প্রতি ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (NCERT)-এর দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বইয়ে অযোধ্য়ার ইতিহাসে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। অযোধ্য়ার ইতিহাস আগে যেখানে লিপিবদ্ধ ছিল চারটি পাতায় বর্তমানে NCERT সেই বিষয়কে লিপিবদ্ধ করেছে দুই পাতায়। পাঠ্যবই থেকে অযোধ্যার ইতিহাস কাটছাঁট করতে গিয়ে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে বাবরি মসজিদের নাম। নতুন পাঠ্যপুস্তকে বাবরি মসজিদের পরিবর্তে লেখা হয়েছে তিনটি গম্বুজ বিশিষ্ট কাঠামো। ইতিহাসের এই বিকৃতি ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

NCERT- হল কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের অধীন একটি স্বয়ংশাসিত সংস্থা। পুরনো সিলেবাসে উল্লেখ করা হয়েছিল, এই পাঠ্যপুস্তকের আগের সংস্করণে বাবরি মসজিদকে মীর বাকি দ্বারা নির্মিত ষোড়শ শতকের মসজিদ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছিল।  ১৯৮৬ সালে মসজিদের তালা খোলার পর আদালতের নির্দেশে দুপক্ষকেই তাঁদের ধর্মীয় আচার পালনের অনুমতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি পুরানো সিলেবাসে ছিল এই মসজিদ ঘিরে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা। গুজরাটের সোমনাথ থেকে অযোধ্যা পর্যন্ত রথযাত্রা। ১৯৯২ সালে করসেবক দ্বারা বাবরি ধ্বংস এবং ১৯৯৩ সালে সাম্প্রদায়িক হিংসারও উল্লেখ ছিল পুরনো পাঠ্যে।

এনসিইআরটির পাঠ্যক্রম মেনে চলে সিবিএসই বোর্ড। আইসিএসই এবং আইএসই বোর্ডও কোনও কোনও ক্ষেত্রে এই পাঠ্যক্রম অনুসরণ করে। এই দুই বোর্ডের পড়ুয়াদের জন্যই নির্ধারিত দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্যক্রমে অযোধ্যার অধ্যায়ে ফলাও করে লেখা হয়েছে ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের রায়ের কথা। অথচ পুরনো বইয়ে যেখানে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের জন্য ১৯৯২ সালে তৎকালীন উত্তরপ্রদেশের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংহের সরকারকে আদালতের ভর্ৎসনার কথা লেখা ছিল, তা বাদ দেওয়া হয়েছে। বাদ দেওয়া হয়েছে দু’টি সংবাদপত্রের ছবিও। যার একটির শিরোনামে লেখা ছিল, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের জন্য কল্যাণ-সরকারকে বরখাস্ত করা হল। অন্যটির শিরোনামে ছিল বাজপেয়ীর বক্তব্য। যেখানে তিনি বলছেন, ‘‘অযোধ্যা হল বিজেপির সবচেয়ে বড় ভুল’’। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে সেই সময় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হওয়া সংক্রান্ত বিষয়গুলি উল্লেখ করা হয়নি বইয়ে।

সে সব পুরোপুরি মুছে নয়া পাঠ্যে বলা হয়েছে, ওই ৩ গম্বুজ বিশিষ্ট কাঠামোর তালা খোলার পর সেখানে পুজোর অনুমতি দিয়েছিল আদালত। যে বিতর্ক দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে। কারণ, মনে করা হত ওই কাঠামো মন্দির ভেঙে তৈরি করা হয়েছিল। যা নিয়ে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। যার প্রেক্ষিতে ১৯৯২ সালে ওই কাঠামো ভেঙে দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে এই ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টের রায়। যেখানে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে এই বিষয়ে রায় ঘোষণা করে দেশের শীর্ষ আদালত। যেখানে হিন্দুপক্ষের দাবিকে মান্যতা দিয়ে আদালতের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয় ওই স্থানে মন্দির গঠনের। ওই বছরই মন্দির গঠনের কাজ শুরু হয় ওই স্থানে।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের পর এই নিয়ে চতুর্থ বার সংশোধন করা হল এনসিইআরটির দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক।