দু’দশকেরও বেশি সময় পর গুজরাট হিংসা নিয়ে বিবিসির (BBC Documentary) তৈরি তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া দ্যা মোদী কোয়েশ্চেন’ প্রবল চাপে ফেলে দিয়েছে মোদী সরকারকে। তথ্যচিত্রটির বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় আশঙ্কায় সেটিকে নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্র সরকার। এবার কেন ওই তথ্যচিত্রটি নিষিদ্ধ করা হল তার ব্যাখ্য়া দিতে বলল সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ৩ সপ্তাহের মধ্যে এনিয়ে জবাব দিতে হবে কেন্দ্রকে।
এই ছবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘গুজরাটের দাঙ্গাকারী’ হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আর তা নিয়েই মূল আপত্তি কেন্দ্রের। তথ্যচিত্রটি প্রচারিত হওয়ার পর থেকেই এনিয়ে দেশজুড়ে হইচই পড়ে যায়। তড়িঘড়ি সেটিতে ইউটিউব ও ট্যুইটার থেকে নিষিদ্ধ করে কেন্দ্র। এহেন ‘বিদ্বেষমূলক’ ছবি এদেশে দেখানো যাবে না – এই মর্মে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। যদিও ইতিমধ্যে জওহরলাল নেহরু-সহ দেশের বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছবিটি দেখানো হয়েছে। কোথাও কোথাও পড়ুয়াদের বাধাদানের অভিযোগও উঠেছে।
তথ্যচিত্রটি নিষিদ্ধ হওয়ার পর কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র, সাংবাদিক এন রাম ও বিশিষ্ট আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। অন্যদিকে আরও একটি মামলা করেন আইনজীবী এম এল শর্মা। শুক্রবার ওই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি এম এম সুন্দরেশের বেঞ্চের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয় তথ্যচিত্রটি নিষিদ্ধ করার আসল কপি আদালতে জমা দিতে হবে।
শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, তার সামনে যে মামলাগুলি রয়েছে এই ইস্যুতে তা শুধু আইনি যুক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ। বেঞ্চের তরফে বলা হয়,’আমরা নোটিস ইস্যু করছি। একটি জবাবি হলফনামা ফাইল করতে হবে ৩ সপ্তাহের মধ্যে, এরপর রিজয়েন্ডার হবে ২ সপ্তাহের মধ্যে।’
আরও পড়ুন: Union Budget 2023: বাজেটে কিসের দাম কমল, কিসের দাম বাড়ল? দেখে নেওয়া এক নজরে
এদিকে, বিবিসি ও তাদের তৈরি তথ্যচিত্রের বিরুদ্ধে মামলা করেন হিন্দু সেনার প্রেসিডেন্ট বিষ্ণু গুপ্তা। তিনি দাবি করেন বিবিসি ও তার কর্মীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হবে। বিবিসির ওই তথ্যচিত্র পক্ষপাতদুষ্ট এবং নরেন্দ্র মোদী ও ভারত সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ওই মামলাটিরও আজ শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে।
বৃহস্পতিবার ব্রিটেনে প্রবাসী ভারতীয়রা বিবিসি এবং ওই তথ্যচিত্রটি ঘিরে বিক্ষোভ দেখানোর পর সে দেশের সরকার জানিয়ে দিয়েছে, ব্রিটেনের জাতীয় সম্প্রচারকারী এই সংস্থা সম্পূর্ণ ভাবে ‘স্বাধীন’। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র বলেন, বিবিসি স্বাধীন সংবাদমাধ্যম। তারা কী সংবাদ পরিবেশন করবে সে ব্য়াপারে তাদের স্বাধীনতা রয়েছে। তবে আমরা এও বলব ভারত আমাদের অত্যন্ত কাছের বন্ধু। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির জন্য সব চেষ্টাই করবে ব্রিটেন।
আরও পড়ুন: LIC: আদানিরা ডুবলেও প্রভাব পড়বে না এলআইসি লগ্নিকারীদের উপর, বিবৃতি কর্তৃপক্ষের