বেঙ্গালুরুর পিজিতে তরুণীকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তকে শনিবার মধ্যপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনার বি দয়ানন্দ জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধৃত ব্যক্তিকে বেঙ্গালুরুতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার রাতে বেঙ্গালুরুর করামঙ্গলমে ঘটে যায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড। রাত ১১টা নাগাদ পিজিতে ঢুকে কৃতী কুমারি নামে এক যুবতীকে খুন করার অভিযোগ ওঠে ধৃত অভিষেকের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার হাড়হিম CCTV ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। যা দেখে শিউরে ওঠেন সকলেই। তারপর থেকেই পলাতক ছিল অভিযুক্ত অভিষেক। শুক্রবার রাতে এক বিবৃতিতে বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার বি দয়ানন্দ জানান, পিজিতে হত্যার তদন্তে তিনটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। এরপর শনিবার সকালেই ধরা পড়ে অভিযুক্ত।
নিহত কৃতি কুমারী (২২) বিহারের বাসিন্দা ছিলেন। কর্মসূত্রে বেঙ্গালুরুর কোরমঙ্গলা অঞ্চলে ভিআর আউটলেটের একটি আবাসনে পেয়িং গেস্ট হিসাবে থাকতেন কৃতি। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাত ১১টা ১০ মিনিট থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে ধারালো ছুরি দিয়ে গলার নলি কেটে খুন করা হয় কৃতিকে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি কৃতির রুমমেটের প্রেমিক। ইদানীং দু’জনের সম্পর্কে ফাটল ধরেছিল। অভিযুক্তের নিজের কোনও উপার্জনও ছিল না, তাই অশান্তি চরমে পৌঁছয়। কৃতি প্রায়ই তাঁর রুমমেটকে পরামর্শ দিতেন সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার। প্রতিশোধ নিতেই এর পর কৃতিকে খুনের সিদ্ধান্ত নেয় ওই ব্যক্তি।
ওই আবাসনের তিন তলার করিডরের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে নৃশংস ওই খুনের মুহূর্ত। সেখানে দেখা যাচ্ছে, মঙ্গলবার রাতে একটি ব্যাগে ধারালো ছুরি লুকিয়ে তিন তলায় ওঠে অভিযুক্ত। এর পর প্রথমে কৃতিদের ঘরের দরজায় কড়া নাড়ে । দরজা খোলার পর যুবতীকে আক্রমণ করে অভিযুক্ত। চুলের মুঠি ধরে তাঁকে করিডরে টেনে আনা হয়। এরপর এলোপাথাড়ি ছুরির কোপ মারা হয় ঘাড়ে, বুকে। মেয়েটি প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও শেষরক্ষা হয়নি। তরুণীর চিৎকারে পিজির অন্যরা ছুটে আসে। অপর একজন মোবাইলে পুলিশের নম্বর ডায়াল করেন। এরপরই অভিযুক্ত পালিয়ে যায়।
এলাকার সিসিটিভি ফুটেজেও ওই ব্যক্তিকে ঘটনার আগে থেকেই আবাসনের সামনে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছে। অর্থাৎ আকস্মিক সিদ্ধান্তের বশে নয়, রীতিমতো ছক কষেই কৃতিকে খুন করেছিল অভিযুক্ত। ঘটনার পর থেকে ফেরার ছিল খুনি। শনিবার তাকে মধ্যপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।