নাবালিকাকে ধর্ষণ করায় উত্তরপ্রদেশের এক বিজেপি বিধায়ককে ২৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত। এর জেরে খারিজ হতে চলেছে দুদ্ধি বিধানসভার বিধায়ক রামদুলারে গোন্দ-এর বিধায়ক পদও। ন’বছর আগে তাঁর বিরুদ্ধে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছিল। শুক্রবার লখনউয়ের এমপি-এমএলএ আদালত রামদুলারেকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানাও করেছে।
উত্তরপ্রদেশে সোনভদ্র জেলার দুদ্ধি বিধানসভার জনজাতি বিধায়ক ছিল রামদুলারে গোঁদ। তার স্ত্রী ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান। রামদুলারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, সে ২০১৪ সালের ৪ নভেম্বর এলাকার এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে। ওই নাবালিকার পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করার পর গোঁদ তার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে লাগাতার তাদের হুমকি দিতে থাকে। অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু শত চাপের মুখে পড়েও মামলা প্রত্যাহার করেনি সেই পরিবার।
রামদুলারে এলাকায় পরিচিত ছিলেন বাহুবলী হিসাবে। তিনি রাজনীতির বড় আঙিনায় প্রবেশের পরিকল্পনা করছিলেন। ২০১৪ সালের ৪ নভেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয় মায়োরপুর থানায়। সেই মামলা চলছিল।
গত বিধানসভা ভোটে শিকে ছেঁড়ে রামদুলারের। তিনি বিজেপি প্রার্থী হিসাবে দুদ্ধি থেকে ভোটে জয় পান। তার পরেই রামদুলারের মামলাটি নিম্ন আদালত থেকে স্থানান্তরিত হয়ে চলে যায় বিধায়ক-সাংসদ আদালতে। মঙ্গলবার সেই আদালতই তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে। শুক্রবার হল সাজা ঘোষণা।
দীর্ঘ শুনানির পর ওই আদালতই এদিন রামদুলারেকে ২৫ বছরের কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে। সেই সঙ্গে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। এমপি-এমএলএ কোর্টের বিচারক ছিলেন আসান উল্লাহ খান। তিনি এদিন রায়ে নির্দেশ দিয়েছেন, ওই বিধায়কের থেকে জরিমানার টাকা আদায় করে নাবালিকাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ তা দিতে হবে।
সরকারি আইনজীবী সত্যপ্রকাশ ত্রিপাঠি এদিন জানিয়েছেন, “ওই বিধায়কের বিরুদ্ধে পসকো আইনে মামলা করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, এই অভিযোগও ছিল যে সে তথ্য প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করছিল। ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা প্রয়োগ করে সেই কারণেই তাকে কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হয়েছে”।
রামদুলারেকে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা থেকে বরখাস্ত করা এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। নিয়ম হল, কোনও বিধায়কের অপরাধমূলক ঘটনায় দু’বছরের বেশি কারাদণ্ড হলেই তাঁর আইনসভার সদস্যপদ খারিজ হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে আগামী ৫ বছর তিনি ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না। রামদুলারের কারাদণ্ড হয়েছে ২৫ বছরের জন্য। পকসো আইনে দেশের আইনসভার কোনও সদস্যের এই প্রথম এত কঠোরতম সাজা হল।