হোটেল বুক করা, কিংবা হোটেলের ঘরে যাওয়ার অর্থ যৌন সম্পর্কে সম্মতি নয়। বোম্বে হাইকোর্ট এদিন সাফ জানিয়েছে, উপরিউক্ত ঘটনাগুলির প্রেক্ষিতে কেউ শারীরিক সম্পর্কে সম্মতি ধরে নিলে, সেটি সম্পূর্ণরূপে ভুল ধারণা। গোয়ার একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে বোম্বে হাইকোর্ট জানিয়েছে, একটি মেয়ে একজন পুরুষের সঙ্গে হোটেলের ঘর বুকিং করলে, কিংবা তার সঙ্গে হোটেলের ঘরে থাকার অর্থ এই নয় যে, তিনি শারীরিক সম্পর্কে সম্মতি দিচ্ছেন।
বোম্বে হাইকোর্টের গোয়া বেঞ্চ সম্প্রতি এই রায় দিয়েছে। বিচারপতি ভরত পি দেশপাণ্ডেকে নিয়ে গঠিত এক সদস্যের বেঞ্চ মারগাঁও নিম্ন আদালতের ২০২১ সালের রায় খারিজ করে দিয়ে একথা জানায়। গুলশের আহমেদ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলায় ওই রায় দিয়ে মামলাটি বন্ধ করে দিয়েছিল আদালত। নিম্ন আদালতের রায়ে বলা হয়েছিল, ওই মহিলা হোটেলের ঘর বুক করেছিলেন। তারপর তিনি সেই হোটেলের ঘরে অভিযুক্তকে নিয়ে গিয়েছিলেন। যাতে বোঝা যাচ্ছে, ওই মহিলা যৌন ক্রিয়ার প্রতি সম্মতিদান করেছিলেন। সুতরাং, অভিযুক্তকে কোনওভাবেই ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না।
এদিন হাই কোর্ট ট্রায়াল কোর্টের বিচারকের মন্তব্যকে ত্রুটিযুক্ত বলে উল্লেখ করেছে। একই সঙ্গে উল্লেখ করেছে আদালত, ওই যুবতীর হোটেলের ঘর থেকে বেরিয়ে আসার পরের পরিস্থিতি, কান্নাকাটি, পুলিশে অভিযোগ করার বিষয়টি থেকেই বোঝা যায়, হোটেলের ঘরে যা হয়েছে, তা তাঁর সম্মতিতে হয়নি। হোটেলের কর্মীরাও এই ঘটনাটি জানিয়েছে, সেকথাও উল্লেখ করেছে আদালত।
মূল ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২০ সালের ৩ মার্চ। অভিযুক্ত ব্যক্তি নির্যাতিতাকে বিদেশে চাকরি করে দেওয়ার টোপ দিয়েছিল। সে মহিলাকে একটি হোটেলে এজেন্টের সঙ্গে মিটিং করিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। সেইমতো হোটেলের ঘর বুক করা হয়। অভিযোগকারিণীর বক্তব্য অনুযায়ী, ঘরে ঢোকার পরেই অভিযুক্ত তাঁকে খুন করার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে। সে বাথরুমে গেলে তিনি বাইরে বেরিয়ে এসে চিৎকার করে কাঁদতে থাকেন। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন।