১৩ বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল তারই প্রেমিকের বিরুদ্ধে৷ যদিও ২৬ বছর বয়সি ওই যুবককে জামিন দিল বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ৷ জামিনের নির্দেশ দিতে গিয়ে বিচারপতি যুক্তি দিয়েছেন, ওই নাবালিকা এবং তার প্রেমিকের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল ভালবাসা থেকেই৷ এর পিছনে কোনওরকম কামাসক্তি ছিল না৷
নীতীন ধাবেরাও – এর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন ‘নির্যাতিতা’ নাবালিকার বাবা। অভিযোগ, ২০২০ সালের ২৩ অগস্ট তাঁর নাবালিকা কন্যার উপর যৌন নির্যাতন করেন ওই যুবক। পুলিশের কাছে নাবালিকার বাবা জানান, বই কেনার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল কন্যা। কিন্তু তার পর আর বাড়ি ফেরেনি। প্রথমে নিখোঁজ ডায়েরি হয় থানায়। পুলিশ পরে বালিকাকে উদ্ধার করে। ঘটনাক্রমে যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৩, ৩৭৬, ৩৭৬ (২) (এন), ৩৭৬ (৩) এবং ৩৪ ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। জোড়া হয় পকসো আইনও। মামলাটি ওঠে হাই কোর্টে।
নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি উর্মিলা যোশী-ফালকের পর্যবেক্ষণ ২৬ বছরের নীতীন ধাবেরাওকে ভালোবেসেই ওই নাবালিকা বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিল। নীতিনও বাড়ি ছেড়েছিল প্রেমের টানেই। তারপর দু’জনের কাছাকাছি আসা। তাই এই মামলাকে যৌন হেনস্থার মামলা বলা উচিত হবে না। কারণ অভিযুক্ত যে শুধুমাত্র যৌন লালসার জন্যই নাবালিকার সঙ্গে সঙ্গম করেছিলেন তা নয়। নেপথ্য়ে ছিল ভালোবাসাও। একে অপরের প্রতি ভালোবাসার কারণে কাছাকাছি এসেছিল তারা। নাগপুর বেঞ্চ এই পর্যবেক্ষণেই অভিযুক্তকে জামিনের নির্দেশ দেয়।
বিচারপতি বলেন, ‘‘এই মামলায় দেখা যাচ্ছে, যৌন সম্পর্কের যে অভিযোগ করা হয়েছে, সেটা দুই উঠতি বয়সির পরস্পরের প্রতি আকর্ষণের প্রতিফলন। এমনটা নয় যে নাবালিকা ওই যৌবকের যৌন লালসার শিকার হয়েছিল।’’ পাশাপাশি বিচারপতি এ-ও বলেন, ‘‘ওই ঘটনার সময় নির্যাতিতার বয়স ছিল ১৩ বছর। তাই তার অনুমতি দেওয়া বা না-দেওয়ার কোনও যুক্তি নেই। তবে নাবালিকাকে যে জোরাজুরি করেননি যুবক সেটা স্পষ্ট। নির্যাতিতা নিজেই তার বয়ানে বলেছে যে, ওই যুবকের সঙ্গে তার ভালবাসার সম্পর্ক ছিল।’’ পাশাপাশি আদালত এ-ও জানায় যে, নাবালিকার বিবৃতি থেকে এটাও দেখা যাচ্ছে যে অভিযুক্তের সঙ্গে সে নানা জায়গায় বেড়াতে যেত। সেই সময়গুলোতেও যুবকের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ উঠে আসেনি। তাই এটা স্পষ্ট যে, প্রণয়ঘটিত কারণে দু’জন ঘনিষ্ঠ হয়। একে ধর্ষণ বলা যাবে না।