লোকসভার ভোটের আগে কৌশলে নাটকের মাধ্যমে নিজের প্রচার করতে চাইছে মোদী সরকার। সম্প্রতি কেন্দ্রের অনুদানপ্রাপ্ত নাট্যদলগুলিকে একটি ছোট নাটক পাঠানো হয়েছে। যে নাকটটি আসলে কেন্দ্রের গুণগান। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে নাটকটি তুলে দিয়ে এমনটাই দাবি করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শুধু তাই নয় তিনি লিখেছেন, নাটকটি না করলে কেন্দ্রের অনুদান বন্ধ হয়ে যাবে।
ব্রাত্য লেখেন, ‘লোকসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার পশ্চিমবঙ্গের থিয়েটার দলগুলিকে প্রধানমন্ত্রীর মহিমাবাচক, গুণকীর্তন করার একটি ছোট নাটিকা পাঠিয়ে বলেছে, সর্বত্র সেটি মঞ্চস্থ করতে হবে। ওই নাটক মঞ্চস্থ না করলে কেন্দ্রের পাঠানো অনুদান এবং ভর্তুকি বন্ধ করে দেওয়া হবে। (NSD Theatre Guidelines)
রাজ্যের নাট্যদলগুলির উদ্দেশে ব্রাত্য লেখেন, ‘পশ্চিমঙ্গের থিয়েটার দলগুলি যেহেতু মূলত বামপন্থী সেক্যুলার, আমরা আশা করতে পারি যে এই নির্লজ্জ প্রস্তাব সকলে ঘৃণাভর প্রত্যাখ্যান করবেন’। কেন্দ্রের পাঠানো বলে একটি নাটিকাও সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেন ব্রাত্য। তিনি লেখেন, ‘ঠেলার নাম বাবাজি কাকে বলে দ্যাখ এবার’।
সামনেই লোকসভা ভোট। তার আঁচ ইতিমধ্যেই আন্দাজ করা যাচ্ছে। অভিযোগ-পালটা অভিযোগের পালা শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ভোটের আগে এমন নির্দেশে স্তম্ভিত ব্রাত্য বসু। কারণ তিনি শুধু মন্ত্রী বা নেতা নন, একজন নাট্যকারও। সোশাল মিডিয়াতে পোস্ট করা প্রত্যেকটি শব্দে যেন শিল্পী তীব্র ধিক্কার জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার ব্রাত্য তাঁর পোস্টের সঙ্গেই কেন্দ্রের পাঠানো ছ’পাতার ছোট নাটিকাটিও পোস্ট করেছেন। হিন্দিতে লেখা সেই নাটকটির নাম ‘লে আয়ে বাপস সোনে কি চিড়িয়া’ যার অর্থ সোনার পাখিকে ফিরিয়ে আনলাম। নাটকটি লিখেছেন ললিত প্রকাশ। নাটকটির মর্মার্থ কী তা জানিয়ে (‘প্রধানমন্ত্রীর মহিমাবাচক ও গুণকীর্তন করা’ বলে উল্লেখ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ) ব্রাত্য লেখেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের থিয়েটার দলগুলি যে হেতু বামপন্থী সেকুলার, তাই আমরা আশা রাখতেই পারি, এই নির্লজ্জ প্রস্তাব তাঁরা সবাই ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করবেন।’’
— Bratya Basu (@basu_bratya) February 13, 2024
মন্ত্রী ব্রাত্যের পোস্ট করা ওই নাটকের পাতায় পাতায় লক্ষণীয় মোদী ব্যবহৃত ‘বিকশিত ভারত’, ‘অখণ্ডতা’ র মতো শব্দবন্ধ। প্রথম পাতার শেষ দিকে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদীর নামও। সেখানে নাটকের এক চরিত্র সূত্রধারকে প্রশ্ন করে, জি২০তে মোদীজি যা বলেছেন, তার অর্থ কী? বসুধৈব কুটুম্বকম বলতে উনি কী বোঝাতে চেয়েছেন।
এই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ধীরে ধীরে করোনার সময়ে ভারতে টিকা তৈরির প্রসঙ্গ এসে পড়ে। আলোচনা হয়, বিশ্বের কোন কোন দেশকে ভারত টিকা দিয়ে সাহায্য করেছে, সেই প্রসঙ্গও। এর পরে ‘বিকশিত ভারত’ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনায় মোদী সরকারের স্লোগান ‘সব কা সব কা বিকাশ’-এর কথাও বলতে শোনা যায় চরিত্রদের।