হিজাব, বোরখা, টুপি ও নাকাব জাতীয় ধর্মীয় পরিচয়বাহী পোশাক পরে কলেজ চত্বরে প্রবেশ করা যাবে না। মুম্বইয়ের (Mumbai) দুটি কলেজে এমনই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তে আংশিক ভাবে সেই স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, ছাত্রীদের পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে ইচ্ছেমতো পোশাক পরে আসার। কলেজ এখানে জোর করতে পারে না।
গত জুন মাসে চেম্বুরের আচার্য ও ডিকে মরাঠে কলেজের কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের জন্য পোশাকবিধি নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। কর্তৃপক্ষের জারি করা নোটিসে বলা হয়েছিল, ‘‘ক্যাম্পাসে থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের অবশ্যই শালীন পোশাক পরতে হবে। ছাত্রেরা হাফ শার্ট বা ফুল শার্ট এবং ট্রাউজ়ার পরতে পারেন। মেয়েরা পরতে পারেন ভারতীয় এবং পাশ্চাত্য পোশাক। তবে শিক্ষার্থীরা এমন কোনও পোশাক পরতে পরবেন না, যাতে তাঁর ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ পায় বা সাংস্কৃতিক বৈষম্য চোখে পড়ে। ক্যাম্পাসে হিজাব, বোরখা, টুপি বা ওই জাতীয় পোশাক অনুমোদিত নয়। পরা যাবে না ছেঁড়া জিন্স, টি-শার্ট কিংবা জার্সিও।’’ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভ ফেটে পড়ে পড়ুয়াদের একাংশ। বিষয়টি নিয়ে বম্বে হাই কোর্টে মামলাও দায়ের হয়। কিন্তু মামলা খারিজ করে দিয়ে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, এমন নির্দেশ পড়ুয়াদের মৌলিক অধিকার খর্ব করে না। এ বার তার বিরুদ্ধে আবেদন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা এবং মনোজ মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করেছিল।
শুক্রবার সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি, বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ সংশ্লিষ্ট দুই কলেজের পরিচালন সংস্থা ‘চেম্বুর ট্রম্বে এডুকেশন সোসাইটি’-কে নোটিস পাঠিয়ে ওই নির্দেশিকা জারির কৈফিয়ত চেয়েছে। দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, আগামী ১৮ নভেম্বরের মধ্যে বোরখা-নিষেধাজ্ঞার কারণ জানাতে হবে।
এদিন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়,”এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে আপনি হঠাৎই ঘুম ভেঙে জানতে পারলেন দেশে এত ধর্ম রয়েছে!” সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তোলে, কেন তিলক বা টিপ পরে আসায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল না। যদি কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশেই আপত্তি করে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে থাকে, তাহলে এগুলিকে কেন অব্য়াহতি দেওয়া হল। পাশাপাশি বিচাপতিদের আরও প্রশ্ন, ”পড়ুয়াদের ধর্মীয় পরিচয় কি তাঁদের নাম থেকে পাওয়া যায় না?”