এতদিন দেশের বিরোধী দলের নেতারা সিবিআই নিয়ে যে অভিযোগ তুলতেন, শুক্রবার সেটাই শোনা গেল দেশের প্রধান বিচারপতি এনভি রমণার গলায়। সিবিআইয়ের মঞ্চে দাঁড়িয়েই তিনি বললেন, সিবিআই তার ‘সক্রিয়তা ও নিষ্ক্রিয়তা’-র ফলে নিজের ‘বিশ্বাসযোগ্যতা’ নিয়ে নিজেই প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে।
শুক্রবার প্রধান বিচারপতি (Chief Justice) বলেন, “বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কখনও এমন হয়েছে পুলিশ অফিসাররা হেনস্তার সম্মুখীন হয়েছেন।” কিন্তু তাতে দমে যাওয়া উচিৎ নয় বলে মত রামানার। তিনি জানিয়েছেন,”এই সময় সিবিআই-এর উচিৎ সমাজে নিজেদের হারিয়ে যাওয়া সম্মান, বৈধতা এবং মানুষের বিশ্বাস ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করা।” প্রধান বিচারপতির মতে , “যদি রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আঁতাত না ভাঙেন, তাহলে সাধারণ মানুষের ভরসা কোনওদিন ফিরে আসবে না।”
চার দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিবিআই-ইডিকে রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগানোর বিরুদ্ধে এককাট্টা হতে বিরোধী দলের প্রধানদের চিঠি লিখেছেন। আজ প্রধান বিচারপতি মত দিয়েছেন, সিবিআই, ইডি, এসএফআইও-র মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে এক ছাতার তলায় নিয়ে এসে অবিলম্বে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান তৈরি করা জরুরি। আইন করে এই সংস্থা তৈরি করতে হবে। তার ক্ষমতা, কাজ, অধিকারও বলা থাকবে আইনে। একটি কমিটি এই সংস্থার অধিকর্তা নিয়োগ করবে। আলাদা আলাদা বিষয় দেখার জন্য অধিকর্তার অধীনে কয়েক জন উপ-অধিকর্তা থাকবেন।
আরও পড়ুন: DA and DR : সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর, বাড়ল ডিএ ও ডিআর
সিবিআই অফিসারেরা যাতে শাসকের ধামাধরা না হয়ে ওঠেন, তার জন্য প্রধান বিচারপতির বার্তা, ‘‘রাজনৈতিক সরকার সময়ের সঙ্গে বদলে যাবে। আপনাদের প্রতিষ্ঠান পাকাপাকি থাকবে। আপস করবেন না, স্বাধীন হোন। নিয়মের বই মেনে চলুন।’’ ক্ষমতার বদলের পরে হেনস্থার শিকার হয়ে অনেকেই আদালতের দ্বারস্থ হন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এক সময় সুপ্রিম কোর্টই সিবিআইকে ‘খাঁচার তোতা’ বলে আখ্যা দিয়েছিল। এ দিন সিবিআইয়ের আয়োজিত সংস্থার প্রথম অধিকর্তা ডি পি কোহলি স্মারক বক্তৃতায় প্রধান বিচারপতি বলেছেন, সিবিআইয়ের উপর মানুষের আস্থা ফেরাতে হলে রাজনৈতিক শাসক শিবির ও প্রশাসনের সঙ্গে সিবিআইয়ের আঁতাত ভাঙতে হবে।
আরও পড়ুন: Aryan Khan Case: আরিয়ান খান মাদক মামলার অন্যতম সাক্ষী প্রভাকর সেইলের আচমকা মৃত্যু