আদালতের ধাক্কায় খুলে গেল জালিয়াতির পরত। বদলে গেল চণ্ডীগড় মেয়র নির্বাচনের ফলাফল। সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে এই প্রথম, আদালতেই গোনা হল ব্যালট। শেষপর্যন্ত বিজেপির জয়ী প্রার্থীকে সরিয়ে আপ প্রার্থী কুলদীপ কুমারকে মেয়র বলে ঘোষণা করল সুপ্রিম কোর্ট। আম আদমি পার্টির তোলা বিতর্কিত ৮টি ব্যালটের দৌলতেই জয় এল আপ শিবিরে। সর্বোচ্চ আদালতের ওই রায়ে বড় ধাক্কা খেল বিজেপি।
গত ৩০ জানুয়ারি মেয়র নির্বাচন ছিল চণ্ডীগড়ে। বিজেপিকে রুখতে হাত মিলিয়ে লড়াইয়ে নেমেছিল কংগ্রেস এবং আপ। ভোটের হিসাবে প্রথমে এগিয়েও গিয়েছিলেন আপ-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী কুলদীপ সিং। মোট ৩৬টি বৈধ ভোটের মধ্যে জোট পায় ২০টি। অন্যদিকে, বিজেপির মেয়র পদপ্রার্থী মনোজ সোনকর পান ১৬টি ভোট। কিন্তু পরে কুলদীপের পাওয়া ৮টি ভোটকে বাতিল ঘোষণা করেন প্রিসাইডিং অফিসার অনিল মাসি। ফলে বিরোধী শিবিরের ভোট নেমে আসে ১২টিতে। ১৬ ভোট পেয়েই জয়ী ঘোষিত হন বিজেপি প্রার্থী।
যেভাবে বিরোধী প্রার্থীর পক্ষে পড়া আটটি ভোট বাতিল করা হল, তার তীব্র প্রতিবাদ শুরু করে আপ এবং কংগ্রেস। এই ঘটনাকে গণতন্ত্রের হত্যা বলে তোপ দেগে দেন আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কংগ্রেসও প্রতিবাদে সরব হয়। এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন বিরোধীরা। অবশেষে শীর্ষ আদালতেই মিলল স্বস্তি। সোমবার এই মামলার শুনানিতে চণ্ডীগড় মেয়র নির্বাচনের প্রিসাইডিং অফিসারকে তীব্র ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ এদিন জানিয়ে দিয়েছে, যে আটটি ভোটকে বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছে, সেগুলিকে বৈধ ভোট হিসাবে গণ্য করে নতুন করে ভোট গণনা করা হবে।
তারপর শীর্ষ আদালতই ফের ওই ৩৬টি ভোট গণনা করে। এবং জানিয়ে দেয়, আপ প্রার্থী কুলদীপ কুমার সিং ২০টি ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। এই ঘোষণা ইন্ডিয়া জোটের জন্য বিরাট জয় হিসাবে দেখা হচ্ছে। কারণ এই প্রথম জোট হিসাবে ভোটে লড়েছিল আপ এবং কংগ্রেস।
মূলত রিটার্নিং অফিসার অনিল মাসির জন্যই ৮টি ব্যালট বাতিল হয়ে যায়। এনিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতিরা। গতকালই আদালতে রিটার্নিং অফিসার বলেছিলেন ওই ৮টি ব্যালট ত্রুটিপূর্ণ। তাই বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু ওইসব ব্যালট পরীক্ষা করে দেখা যায় সেখানে কোনও সমস্যা নেই। রিটার্নিং অফিসারের আচরণ দুটি কারণে শাস্তিযোগ্য। একটি হল, উনি মেয়র নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছেন। দ্বিতীয়ত তিনি আদালতে মিথ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর জন্য তাঁর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।