কোভিশিল্ড (Covishield) ভ্যাকসিনের সাইড এফেক্ট নিয়ে বড় স্বীকারোক্তি করেছে মূল প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা (AstraZeneca)। এর পর থেকেই গোটা দেশে কোভিডের ১৯-এর (Covid 19) এই ভ্যাকসিন নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় কতখানি ক্ষতি হতে পারে, তা জানতে উদগ্রীব সকলেই। এই অবস্থায় কোভিশিল্ডের সাইড এফেক্ট সংক্রান্ত মামলা শুনতে রাজি হল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)।
কোভিশিল্ড টিকা তৈরি করেছিল ব্রিটিশ সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। ভারতে তা তৈরি করে বিক্রি করেছিল সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া। কোভিশিল্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে বিশাল তিওয়ারি নামের এক আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। সুপ্রিম কোর্টে আবেদনকারীদের দাবি, টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া যাচাইয়ের জন্য বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করা হোক। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির পর্যবেক্ষণে চলবে তদন্ত। টিকা নেওয়ার পর যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিক সরকার। পিটিশনে এও দাবি করা হয়েছে যে, ওই টিকা নিয়ে অনেকে শারীরিক ক্ষমতা হারিয়েছেন। তাঁদের ক্ষতিপূরণের দাবি তোলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের মুখ্য বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এখনও শুনানির দিন ধার্য করেননি। দ্রুত শুনানির আর্জিও মানা হয়নি।
সম্প্রতি অ্যাস্ট্রাজেনেকা স্বীকার করেছে, তাঁদের টিকা যাঁরা নিয়েছেন তাঁদের মধ্যে থ্রম্বোসিস বা রক্ত জমাট বাঁধার লক্ষণ দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকরা যে কথা আগেই বলেছিলেন। এর মধ্যেই উদ্বেগজনক রিপোর্ট পেশ করেছে অসম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। ICMR অনুমোদিত মাল্টিডিসিপ্লিনারি রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে হওয়া এই গবেষণা জানিয়েছে, কোভিশিল্ড প্রাপকদের ৫৫ শতংশই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার স্বীকার হয়েছেন। জ্বর, মাথা যন্ত্রণার মতো রোগে ভুগেছেন। প্রথম ডোজ নেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই এই ধরণের সাইড এফেক্ট দেখা গিয়েছে টিকা গ্রহীতাদের মধ্যে। সব মিলিয়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নিয়ে হাজার প্রশ্ন উঠছে।
ব্রিটেনেও কাঠগড়ায় কোভিশিল্ড টিকা। জেমি স্কট নামে এক ব্যক্তি মামলা করেছেন। তাঁর দাবি ২০২১ সালের এপ্রিলে টিকা নেওয়ার পর রক্ত জমাট বেঁধেছিল। এর ফলে তাঁর মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়েছিল। প্রথমে এই দাবি অস্বীকার করলেও পরে অ্যাস্ট্রজেনেকা আদালতে বলে, ‘বিরল ক্ষেত্রে’ এই টিকা নিলে টিটিএস হতে পারে। কোর্টে এই নিয়ে প্রায় ৫০টি মামলা দায়ের হয়েছে। তার পরেই সংস্থা বিবৃতি দিয়ে মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানায়। পাশাপাশি, জানিয়ে দেয় রোগীদের সুরক্ষা এবং ওষুধের মানরক্ষার বিষয়ে তারা বদ্ধপরিকর। ভারতে এই খবর প্রচারের পর আশঙ্কার পরিস্থিতি তৈরি হয়। অনেক বিশেষজ্ঞই জানিয়েছেন, বেশির ভাগ টিকারই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে।