করোনা টিকা কোভিশিল্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। স্বীকার করে নিল টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা ‘অ্যাস্ট্রজেনেকা’। গত ফেব্রুয়ারিতে আদালতে জমা দেওয়া এক নথিতে ওই সংস্থা জানিয়েছিল, তাদের তৈরি করা প্রতিষেধকের কারণে বিরল রোগ ‘থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম’ (টিটিএস)-এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে। এই রোগে আক্রান্ত হলে রক্তে অণুচক্রিকার পরিমাণ কমে যায় এবং রক্ত জমাট বাঁধে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সহযোগিতায় এই প্রতিষেধক তৈরি করেছিল সংস্থাটি। কোভিশিল্ড ছা়ড়াও ভ্যাক্সেজেরিয়া নামেও একটি প্রতিষেধক বাজারে এনেছিল ওই সংস্থা। তবে এ দেশে কোভিশিল্ড সর্বাধিক পরিচিত। অনেকেই এই টিকা নিয়েছেন। কিন্তু অন্যটির ভারতে তেমন ব্যবহার হয়নি।
জানা গিয়েছে, ২০২১ সালে কোভিড টিকার ট্রায়াল নিয়েছিলেন এক মহিলা। ইঞ্জেকশন নেওয়ার পরেই ওই মহিলা স্বেচ্ছাসেবকের অজানা রোগ দেখা গিয়েছিল। যদিও কোন রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন সেটা প্রথমে জানায়নি ব্রিটিশ-সুইডিশ ফার্ম। এরপরে ২০২৩ সালে অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে প্রথম মামলাটি দায়ের করেছিলেন জেমি স্কট নামে এক ব্যক্তি। তিনি অভিযোগ করেন যে ২০২১ সালের এপ্রিলে ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় ও তা জমাট বেঁধে যায়। এর ফলে তাঁর মস্তিষ্কে স্থায়ী ক্ষত তৈরি হয়। স্বাভাবিক কার্যক্ষমতাও কমে গেছে জেমি স্কটের।
এর পর আরও অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থদের পরিবারের তরফে ‘অ্যাস্ট্রোজ়েনেকা’র বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হয়। তখন থেকেই মামলা চলছে। বিভিন্ন কাগজপত্র, প্রমাণ দেখিয়ে নিজেদের নির্দোষের প্রমাণ করার চেষ্টা করে সংস্থা। মামলা চলাকালীন, আদালত জানিয়ে দেয়, সংস্থার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ যদি সত্যি হয় তা হলে জরিমানা দিতে হবে। সেটাই সত্যি হল শেষ পর্যন্ত। তীরে এসে ডুবল কোভিশিল্ড প্রস্তুতকারী সংস্থার। আদালতে স্বীকার করে নিতে বাধ্য হল যে, তাদের তৈরি প্রতিষেধকে কঠিন রোগের ঝুঁকি আছে।
ব্রিটেনের হাইকোর্টে এই নিয়ে ৫১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যেখানে ভুক্তভোগীরা মোট ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ব্রিটিশ-সুইস এই কোম্পানিটির স্বীকারোক্তির ফলে প্রতিষ্ঠানটিকে বিপুল পরিমাণ জরিমানা গুনতে হতে পারে।